শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বৃষ্টিতে ডুবেছে ঢাকা, দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃষ্টিতে ডুবেছে ঢাকা, দুর্ভোগ

বৃষ্টিতে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ছবিটি ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে তোলা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের ফলে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে ডুবন্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে ঢাকা। বিরূপ আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সকাল ৬টা-সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকাতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৭৬ মিলিমিটার। সন্ধ্যার পরও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান বলেন, ঢাকার এ বৃষ্টিপাতকে ভারি বৃষ্টি বলা হয়। তবে এটা যদি ৮৮ মিলিমিটারের বেশি হয় তবে তাকে আমরা অতিভারি বৃষ্টি বলে থাকি। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে অতিভারি বৃষ্টির দিকেই যাচ্ছে। চট্টগ্রামে বেলা ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৯ মিলিমিটার। এ ছাড়া সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরে ২ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকা স্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাসের চেয়ে ১-২ ফুট বেশি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। আজকের পূর্বাভাস জানিয়ে এ আবহাওয়াবিদ বলেন, নিম্নচাপ স্থলভাগে উঠে আসায় আজও বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এ নিম্নচাপ যেদিক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে সেখানেই বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। তবে আগামীকাল থেকে বৃষ্টি কমবে বলে আমরা আশা করছি। এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সারা দেশে ছোট আকারের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখতে বলেছে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ। এ সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার জানান, খারাপ আবহাওয়ার কারণে সারা দেশে ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের সব ধরনের নৌযানের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর উপকূলীয় এলাকা হাতিয়া, বেতুয়া ও রাঙ্গাবালিতে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। ঢাকার সদরঘাটে বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক সৈয়দ মাহফুজুর রহমান জানান, বিকাল সাড়ে ৫টায় ফারহার-৪ লঞ্চটি হাতিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমুদ্রবন্দরগুলোতে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় কর্তৃপক্ষ ওই রুটের সব লঞ্চের যাত্রা বাতিল করেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত  উপকূলীয় এলাকায় কোনো ধরনের লঞ্চ চলবে না বলে জানান তিনি। দিনভর বৃষ্টিতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, কালশী, ধানমন্ডি, রামপুরা, মালিবাগ, মধুবাগ, মীরবাগ, বাড্ডা, কাঁঠালবাগান, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমেছে। রাস্তায় জমে থাকা পানির কারণে বন্ধ হয়ে পড়ছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার এবং গণপরিবহন। 

রামপুরার বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম বলেন, বৃষ্টি হলেই আমাদের এ এলাকাতে হাঁটু পানি জমে যায়। ড্রেনের পানি আর বৃষ্টির পানি মিশে উৎকট গন্ধ আর কাদায় রাস্তায় নামার অবস্থা থাকে না। তার উপর ভাঙা রাস্তা। ছুটির দিন না হলে ছেলেমেয়েকে স্কুলে দিতে আর অফিস যেতে বিপত্তির সীমা থাকে না।

সর্বশেষ খবর