রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

অজ্ঞাত ব্যক্তির কথোপকথন ফাঁস, বিস্ময় ব্যারিস্টার খোকনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

লন্ডন সফর শেষে গত বুধবার দেশে ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওইদিন বিমানবন্দরে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ব্যাপক শোডাউন করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরবপ্রবাসী অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে এ নিয়ে মোবাইলে কথা হয় দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের। সেখানে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি ব্যারিস্টার খোকনকে জানান, খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দরে অভিনন্দন জানাতে যাত্রাবাড়ী-সাইনবোর্ড এলাকা থেকে তিনি ৫ হাজার লোকের ব্যবস্থা করেন। এজন্য তিনি দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বিস্ময় প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে গতকাল জানান, ‘আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এ সময় অনেক ফোনই আসে। এর মধ্যে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তিরও ফোন আসে। আমি তাকে চিনি না। তার কথায় বুঝতে পেরেছি, সৌদি আরবে তিনি মনে হয় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। কথাবার্তায় বুঝতে পেরেছি, তার বাড়ি নোয়াখালীতেই হবে। তিনি বিএনপির নেতা-কর্মী না সমর্থক তাও জানি না। তবে তিনি আষাঢ়ে গল্প যে করছেন, তা বুঝতে পারছিলাম। সৌদিতে বসে তিনি ৫ হাজার লোক পাঠান— এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। তার সঙ্গে এমন কোনো বক্তব্যও আমি দিইনি, যা স্পর্শকাতর। এখন এটা সরকারি দলের লোকজন প্রচার করে তাতে তারা সরকারের লাভ করছে না ক্ষতি করছে বুঝতে পারছি না। আওয়ামী লীগের এক আইনজীবী নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এটা প্রচার করছেন। ভালোই করেছেন।

নিম্নে অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো।

অপরিচিত কণ্ঠ : হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : ওয়ালাইকুম আসসালাম।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : ঢাকা শহর তো আজ ভরপুর মানুষে দেখছেননি।

অপরিচিত কণ্ঠ : আমরা যাত্রাবাড়ী-সাইনবোর্ড থেকে ৫ হাজার লোকের ব্যবস্থা করেছি।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : তাই অনেক লোক, অনেক লোক।

অপরিচিত কণ্ঠ : আমি দেড় শ লোক দিছি। দেড় শ লোককে দেড় লাখ টাকা দিয়েছি। একেকজন এক হাজার করে।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : লাখ লাখ লোক হইছে আজ। লাখ লাখ লোক। ভালো।

অপরিচিত কণ্ঠ : দুইটা দিন অনলাইনে ছিলাম।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : তাই নাকি, আচ্ছা।

অপরিচিত কণ্ঠ : আপনার ব্যানার একটা আছিল। ওইটা পোস্ট করছি আমি নিজে।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : আপনি ঢাকা নাকি, দেশে নাকি, আপনি দেশে নাকি।

অপরিচিত কণ্ঠ : না নানা, সৌদি আরবে আমি।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : ওখান থেকে কন্ট্রোল করছেন।

অপরিচিত কণ্ঠ : আপনার ব্যানারে যেটা উকিল ব্যারিস্টারগো যেটা আমি সেটা নিজে পোস্ট করছি।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : তাই নাকি, ভালো আছেন না?

অপরিচিত কণ্ঠ : ভালো, আপনি ভালো আছেন?

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : হ্যাঁ, আছি ভালো আছি মোটামুটি, শোকর আলহামদুলিল্লাহ।

অপরিচিত কণ্ঠ : ম্যাডামের উপদেষ্টা আছে না যে ড. এনামুল হক। সিলেট বাড়ি। গত পরশু দিন আইছিল তো। ম্যাডামের সঙ্গে আছে একসঙ্গে নামছে ফ্লাইটে। পরশু দিন এখান থেকে দুবাই গেছে। দুবাই ম্যাডামের সঙ্গে একসঙ্গে আছে। গত তিন-চার দিন আমাদের সঙ্গে আছিল। অন্য খাবার টাবার খাওয়াইছি। ওনার মেয়েকে গিফট দিছি।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : ভেরি গুড, ভেরি গুড। শোকর আলহামদুলিল্লাহ। দুই মাস-আড়াই মাস ল ইয়ারদের আন্দোলনের পরে থেকে।

অপরিচিত কণ্ঠ : মোটামুটি আমাদের গত পাঁচ বছরের থেকে গত দুই মাসের ল ইয়ারদের আন্দোলনে আমরা আগাই গেছি।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : আগাই গেছি না। শুরু করে দিয়েছি। দুই মণ-আড়াই মণ মিষ্টি আমি খাওয়াইছি। সেই মিষ্টি থেকে শুরু হয়ে গেছে ঘটনা। মিষ্টির ওপর বক্তৃতা দেয় দেখেন না।

অপরিচিত কণ্ঠ : গত পাঁচ বছরে যা হয়নি এই দুই মাস-আড়াই মাসে শুরু হয়ে গেছে। লন্ডন থেকে আসার পরে তা হইছে। লন্ডন থেকে আসার পরে কামে লাগছে।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : রাইট, রাইট, পুলিশ অস্ত্র, ইলেকশন কমিশন অস্ত্র, জুডিশিয়ালি অস্ত্র নাকি, হ্যালো ইনশা আল্লাহ।

অপরিচিত কণ্ঠ : নির্বাচন যদি আমাদের পক্ষে থাকে। আমরা চেষ্টা করব সুষ্ঠু নির্বাচন দেক। আমরা আছি। আপনি যেটা যেখানে কইবেন।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : ঠাণ্ডা মাথায় করতে হবে সবকিছু। দোয়া করেন। থ্যাঙ্ক ইউ।

অপরিচিত কণ্ঠ : আপনার সঙ্গে আছি। যা বলবেন আছি।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন : জানি, জানি তো। মহাসচিব খুব হ্যাপি। আপনার প্রতি খুব খুশি।

দেখছেননি আমরা চিনি না কিছু লোক কিন্তু বিএনপির জন্য কী করতে চায়। থ্যাঙ্ক ইউ, ভালো থাকেন, ভালো থাকেন।

সর্বশেষ খবর