বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রশ্নে জোরালো হয়েছে ভারতের সুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা প্রশ্নে জোরালো হয়েছে ভারতের সুর

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ভারতের সুর আগের চেয়ে জোরালো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ব জনমত আরও জোরদার হয়েছে। তিনি চলমান রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও সাংবাদিকদের বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধানে পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। গতকাল সেতু ভবনে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আগে ভারত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠালেও শক্ত কোনো অবস্থানে যায়নি। কিন্তু এ সপ্তাহের শুরুতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এসে বলে গেছেন, মিয়ানমারকে তাদের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। কাজেই এ ব্যাপারে ভারতও তাদের চাপ দেওয়া শুরু করেছে বলে আমাদের মনে হয়। তিনি বলেন, এভাবে যদি আমাদের অন্যান্য বন্ধু দেশ এগিয়ে আসে— রাশিয়া ও চীন, যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন করছে, আমেরিকাও কঠিন অবরোধের কথা চিন্তা করছে। এভাবে সবাই এগিয়ে এলে মিয়ানমার অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। দেশের চলমান রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বললেও আগামী নির্বাচনের আগে সংবিধানে হাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শুনতে পাচ্ছি তাদের দলের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনা করেছেন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করবেন। এ নিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিতে পারে। বিরোধী দল হিসেবে তারা এটা করতেই পারে। তবে তারা যতই এটা নিয়ে হৈচৈ করুন না কেন, আগামী নির্বাচন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে, বর্তমান সরকার সেখানে সহায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে এসে দুই-তৃতীয়াংশ আসন জিততে পারে, তখন তারা মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে পারবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের হাইকমিশনার এসেছিলেন ভারতীয় ঋণের উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে। তবে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। যার মধ্যে তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গও ছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অঙ্গীকার রক্ষা করতে ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তিস্তা ইস্যু যেন আমাদের পরবর্তী নির্বাচনের আগে সুরাহা হয় সেটি আমরা জানিয়েছি। তিনি জানান, আগামী মাসে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের ভারত সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েও হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।  ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, এ মাসের শুরুতে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এরপর বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব এখানে এসেছিলেন। সর্বশেষ আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এসেছিলেন। এসব বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রীকে অবহিত করেছি। পাশাপাশি রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়েও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।  তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সফরে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে গেছেন। আমরা আশা করি, মিয়ানমার রাখাইনে তাদের সহিংসতা বন্ধ করবে এবং তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে নিরাপদ ও টেকসই পরিস্থিতি তৈরি করবে। সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর : এদিকে দুপুরে সড়ক বিভাগের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের ৪১তম সভা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা শেষে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ঢাকা মহানগরীতে যাত্রী পরিবহনে সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে গঠিত কমিটি আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া বৈঠকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসমূহের ইকোনমিক লাইফ বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। এ মতামতের ভিত্তিতে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সর্বশেষ খবর