সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ভোটযুদ্ধে সরব তিন সিটি

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্

আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ ততই বাড়ছে। বড় দুই দলের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী অনেকটা নিশ্চিত হলেও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এখনো নিশ্চিত হয়নি। সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের মনে প্রশ্ন কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। তবে প্রার্থীদের আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন গতবারের মেয়র প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান ও মেয়র প্রার্থী থেকে সরে যাওয়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের নাম। তবে এই দুই নামের সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান রাসেল সরকারের নামও। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনকারী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুর রহমান কিরণও দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন বলে জানা গেছে। নির্বাচনকে ঘিরে পুরো সিটি এলাকা এখন ফেস্টুন, ব্যানারে ছেয়ে গেছে।

২০১৩ সালে গঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনে প্রথম নির্বাচন হয় ওই বছরের ৬ জুলাই। ৫৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত দেশের বৃহত্তর এই সিটির নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের নিয়েই আলোচনা তুঙ্গে। বিশেষ করে মহানগরের সর্বত্রই এখন আলোচনা সিটি নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী? কেন্দ্রীয়ভাবে এখনো কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি। সম্প্রতি ভাওয়াল কলেজ মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে দলীয় মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা আসতে পারে এমন আশায় ছিলেন অনেকে। দলীয় সূত্র মতে, গাজীপুরে আজমত উল্লা খান ও জাহাঙ্গীর আলম দুজনই আওয়ামী লীগের সম্ভাবনাময় মেয়র প্রার্থী। এদের একজন দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে কে পাবেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। সবকিছু নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তবে ভোটারদের দাবি, একজন বিচক্ষণ মেয়র নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন হবে। প্রথমবার সিটি মেয়র পেয়েও সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন বহু কাজ থেকে। এবার সেই ভুলটি করতে চান না ভোটাররা। পুরো সিটি এলাকায় জাহাঙ্গীর আলম ও রাসেল সরকারের প্রচারণা উল্লেখ করার মতো। সে তুলনায় আজমত উল্লা খানের প্রচারণা কম।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আজমত উল্লা খান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমি আছি। আমি নিশ্চিত দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। যেহেতু আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, তাই অনেকেই মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে মেনে নিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখে ভোটারদের মন জয় করতে কাজ করে যাচ্ছি। সিটি এলাকার এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী, দল আমাকে দিয়েই নির্বাচন করাবে। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব।

আওয়ামী লীগের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান রাসেল সরকার  বলেন, নেত্রী যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে হারানো সিটি উদ্ধার করে নেত্রীকে উপহার দেব। সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনকারী আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, বহুদিন ধরে জনগণের সেবা করে আসছি। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বও পালন করেছি। তাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাই। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব।

এদিকে গাজীপুরের সাধারণ মানুষ বিগত সময়ে এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না হওয়ায় সিটির অভিভাবকের ওপর অনেকটা ক্ষুব্ধ। সামান্য বৃষ্টিতেই এলাকাটি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তখন মানুষের দুর্দশার সীমা থাকে না। পাড়া-মহল্লায়, সড়ক-মহাসড়কে ময়লার স্তূপ। টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা মঞ্জু বেগম বলেন, রাজধানীর পাশের সিটিতে বসবাস করি। তারপরও সমস্যার শেষ নেই। বৃষ্টিতে হাঁটু পানি, মশার উপদ্রব, ভাঙাচোরা রাস্তায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। টঙ্গীর আরিচপুরের বাসিন্দা ইমরান বলেন, অনেক আশায় ছিলাম সিটি মেয়র এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করবেন। কিন্তু আমাদের সব আশা হতাশায় পরিণত হয়েছে। মেয়র থেকেও নেই। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, আমি নিজেও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হোসেন বলেন, মেয়র পদে মনোনয়ন দৌড়ে আজমত, জাহাঙ্গীর এগিয়ে আছেন। যাকেই নৌকা দেওয়া হবে আমরা তাকেই বিজয়ী করব।

 

সর্বশেষ খবর