মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
অভিমত

রায় ইতিবাচক, তাগিদ পর্যবেক্ষণ বাস্তবায়নে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাযজ্ঞ মামলায় হাইকোর্টের রায়কে খুবই ইতিবাচক ও দৃষ্টান্তপূর্ণ বলে মনে করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এর একজন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মইনুল ইসলাম বিডিআর বিদ্রোহের পর বিডিআরের (পরবর্তীতে বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বলছেন, এই রায় ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অন্যজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশীদ। তিনিও মনে করেন, রায় ইতিবাচক। একই সঙ্গে এই রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে সেগুলোর বাস্তবায়ন ও কার্যকরের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। আপিল বিভাগের রায়ের পর গতকাল সন্ধ্যায় টেলিফোনে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মইনুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই রায় খুবই ইতিবাচক। এ রকম একটা রায়ে আমরা খুশি। এখন আমরা এর দ্রুত বাস্তবায়ন ও কার্যকর চাই। রায় দ্রুত কার্যকর হলে যারা বিডিআর বিদ্রোহে স্বজন হারিয়েছেন, আমরা যারা সহকর্মী হারিয়েছি তারা স্বস্তি পাব।’ জেনারেল মইনুল ইসলাম মনে করেন, এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস দেখাবে না। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ রায় নিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘প্রচলিত বিচারব্যবস্থা অনুসরণ করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ একটি বিদ্রোহের বিচারকার্য সম্পন্ন করতে পারা— এটি রাষ্ট্রের ও বিচার বিভাগের বড় অর্জন। এত বড় বিচারকার্য করার অভিজ্ঞতা এর আগে বাংলাদেশের ছিল না। অর্জনও করেনি। এমনকি বিশ্বের অন্য কোনো দেশকেও আমরা এমন বিচারকার্য করতে দেখিনি। আমি মনে করি, এই বিচারকার্য পরিচালনা রাষ্ট্রের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এই রায়ের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র একটা বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই বিচারকার্যের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের কার্যক্রম দেখে মনে হয় তারা প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছেন। এ কারণে এই বিচারকার্য সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।’ জেনারেল রশীদ মনে করেন, এই রায়ে যে পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে সেগুলো খুবই বাস্তবধর্মী ও সঠিক। এই পর্যবেক্ষণের বিষয়গুলোর ওপর যদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায় তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে রাষ্ট্র সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, অন্যদিকে এতগুলো লোকের ফাঁসি কার্যকর করাটা একটা প্রশাসনিক জটিলতা ও মানবিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে। এতসংখ্যক লোকের ফাঁসির বিষয় এবং তাদের পরিবারের যে আকাঙ্ক্ষা, অর্থাৎ তারা ফাঁসি চাইবে না, দায়মুক্তি চাইবে। যদি রাষ্ট্র আইনের অবস্থান থেকে সরে আসে তাহলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনার জন্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থার তত্পরতা দেখা যেতে পারে। সেটিও রাষ্ট্রের জন্য একটা নতুন চাপ। সেটি মোকাবিলার জন্যও রাষ্ট্রকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর