সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিএনপি-আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সমঝোতা অসম্ভব

বাদল নূর

বিএনপি-আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সমঝোতা অসম্ভব

মুকুল বোস

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুকুল বোস বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি জোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমঝোতার সম্ভাবনা নেই—এটা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে সক্ষম। তারা ইতিমধ্যেই নিরপেক্ষতা প্রমাণ করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলেও সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে একাদশ জাতীয়  নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে নিজ অফিসে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। মুকুল বোস বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। কারণ নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের সমঝোতা না হলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন করার মতো শক্তি-সামর্থ্য কোনোটাই নেই। বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও তার দলের একটি অংশ আগামী নির্বাচনে আসবে। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে খবর আছে। তা ছাড়া দেশের অন্যান্য দলও নির্বাচনে আসবে। তিনি বলেন,  দু-একটি দল নির্বাচনে না এলে নির্বাচন আটকে থাকবে না। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে আলোচনা সম্ভব নয় কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর সংবাদ শুনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দরজা থেকেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোনে খালেদা জিয়াকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তখন তিনি আলোচনায় বসতে রাজি হননি। তা ছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যন তারেক রহমানের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছিল, পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে দিয়েছিল তাদের সঙ্গে সমঝোতা হয় কী করে। চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে আলোচনা-সমঝোতা কোনোটাই হতে পারে না। মুকুল বোস বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজুর রহমানকে মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে জোট করে তাদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের বন্ধু পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রয়োজন। মুকুল বোস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ক্ষমতায় আসার পরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা কোনোদিন কোনো দেশে হয়নি। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল না ধরলে চক্রান্তকারীদের কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারত না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হতো না, যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার হতো না। শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন এবং সুশাসনের জন্য যে ভূমিকা রেখেছেন তাতে বিশ্বে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে তার প্রশংসা করেছেন। আমরা মনে করি দেশের উন্নয়ন দেখে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবার বিজয়ী করবে। তিনি গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী-মুকসুদপুর-১ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশার কথা জানান। মুকুল বোস ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর পরে একাধারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সর্বশেষ খবর