মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাতির স্বার্থে এক হোন

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতির স্বার্থে এক হোন

নূরে আলম সিদ্দিকী

দেশের কথা ভাবুন, প্রান্তিক জনতার কথা ভাবুন। যারা ক্ষমতার প্রকৃত উৎস, সেই গ্রামবাংলার মানুষগুলোর কথা ভাবুন। স্বাধীনতা যুদ্ধ, ১ মার্চ, ৭ মার্চ, ২৩ মার্চ, ২৭ মার্চ কিছুই হতো না, যদি ’৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেটটি আমাদের না থাকত। আগামী ২০১৯-এর নির্বাচনটিকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য যা যা করার দরকার তাই করুন। আপনারা বসুন, কথা বলুন, আপনারা জাতির স্বার্থে এক হোন। রবিবার দিবাগত রাতে জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় চ্যানেল আইর টকশো তৃতীয় মাত্রায় সরকার ও বিরোধী রাজনীতিকদের উদ্দেশে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নূরে আলম সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এই দেশটিতে সত্যিকারের যে উন্নয়নটি দরকার, যে উন্নয়নটি এই দেশের অর্থনীতি বিনির্মাণের জন্য দরকার বা এর ভিত্তিকে সুদৃঢ় করবে, যে উন্নয়নে প্রান্তিক জনতার কল্যাণে বা মঙ্গলে আসবে সে ধরনের পরিকল্পনা সরকার নিলে সেটা হবে জাতি গঠনের পরিপূরক, সেটা হবে মানুষের কল্যাণের পরিপূরক। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে, যেখান থেকে অর্থ বেশি সরানো যাবে, পার্সেন্টেজ বেশি পাওয়া যাবে সেই ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে আজকে যে উন্নয়ন করা হচ্ছে, আজকে উন্নয়নের নামে নেতা-নেত্রীরা যে চিৎকার করছেন তাতে দেশের অর্থনীতি মজবুত হবে না, জনগণের সমর্থনকেও ধরে রাখা যাবে না। সিদ্দিকী বলেন, দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে সরিয়ে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। হাওয়া ভবন অথবা ২১ আগস্টের ভয়াবহতার কথা এদেশের মানুষ ভুলে যায়নি। যখনই খালেদা জিয়ার কথা মানুষের মনে হয়, তখনই হাওয়া ভবন ও দলীয়করণের কালগ্রাসী রোবটটিকেই মানুষের মনে পড়ে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সৌদি আরবে ওমরাহ করতে যাওয়ার প্রাক্কালে শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ৮০টি ট্রাঙ্ক ভর্তি করে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যান। কাজেই তিনি যে টাকা পাচার করেছেন, এ ব্যাপারে আমার মনে হয়, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মনেও কোনো সন্দেহ নেই। বর্তমান ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এই নেতা বলেন— ছাত্রদের নেতৃত্বের মূল্যবোধটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হতো রাজনীতির প্রসূতিকাগার, আন্দোলনের পীঠস্থান, সেটিকে আজকে সন্ত্রাসের সূতিকাগারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আজকের ছাত্ররা ব্যস্ত টেন্ডারবাজিতে, তারা ব্যস্ত হলের সিট দখলে, তারা ব্যস্ত ভর্তিবাণিজ্যে। মুক্তিযুদ্ধকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, আমার প্রাণের সংগঠন, আমার স্বপ্নের সংগঠন, আমার সাধনার সংগঠন, আমার যৌবনের সব কল্পনার উৎস, এই উদ্ধত, উদগত, পূর্ণায়ত পদ্মটির মতো যার দৌলতে আমি সারা বাংলাদেশে বিকশিত হতে পেরেছিলাম সেই সংগঠন ছাত্রলীগকে অবক্ষয়ের অতলান্তে তলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ যে আমার জন্য কতটা কষ্টের, এ যে আমার জন্য কতটা বেদনার, এ যে আমার জন্য কতটা আত্মচিৎকারের! আমার হৃদয়ের সিংহাসনে জাগ্রত দেবতা কীভাবে যে কুঁকড়ে কেঁদে ওঠে— সেটা আমি বোঝাতে পারব না।

ছাত্রলীগের এই পরিণতির জন্য সুপরিকল্পিত একটি পরিকল্পনা দায়ী, সুপরিকল্পিত একটি সামাজিক ষড়যন্ত্র দায়ী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর