শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আলোচনায় বাপ-বেটা

ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি

মাহমুদ আজহার

আলোচনায় বাপ-বেটা

আবদুল আউয়াল মিন্টু---তাবিথ আউয়াল

সর্বশেষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। সেখানে মেয়র প্রার্থী কে হবেন তা চূড়ান্ত না হলেও ঘুরেফিরে গত নির্বাচনে দলের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নামই উঠে আসে। তবে আওয়ামী লীগ যদি হাইপ্রোফাইলের প্রার্থী ঘোষণা করে সেক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থীও পরিবর্তন হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সেখানেও এগিয়ে রয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও তাবিথ আউয়ালের বাবা আবদুল আউয়াল মিন্টু। দলের ভিতরে-বাইরে তার নামই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীদের বড় অংশই মনে করছেন, বাপ-বেটার মধ্যেই মেয়র প্রার্থী বেছে নিতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আবার একটি অংশে এমন আলোচনাও আছে মিন্টু পরিবারের বাইরেও প্রার্থী হতে পারেন। সেক্ষেত্রে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর (অব.) কামরুল ইসলামের নামই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি সিটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর বাইরে বিএনপির বিকল্প ভাবনা নেই বলেও সূত্র জানায়। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘স্থানীয় সরকারের অধীনে সব নির্বাচনেই বিএনপি অংশ নিয়েছে। আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরের নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নিতে চায়। এক্ষেত্রে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থী যিনিই হন, বিপুল ভোটে পাস করবেন ইনশা আল্লাহ। এখনও দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন ব্যবসায়ী  নেতা আনিসুল হক। এর মধ্য দিয়ে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর প্রায় দুই বছর ধরে ওই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই যুক্তরাজ্যে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিসে আক্রান্ত আনিসুল হক। চিকিত্সাধীন অবস্থায় ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। এরপর এই সিটিতে মেয়র পদ শূন্য হয়। জানা যায়, সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান ২০ দলীয় জোটের শরিক দল বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। এ সময় বেগম জিয়ার কাছে নিজের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। তবে চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাননি পার্থ। তাবিথ আউয়ালের ব্যাপারেই ইঙ্গিত দেন বিএনপি প্রধান। এ ছাড়া বিকল্পধারা বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীর ব্যাপারেও আলোচনা আছে বিএনপির ছোট্ট একটি অংশে। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের কাছে মাহী বি চৌধুরীও অপছন্দের তালিকায় রয়েছেন। বিএনপির সিনিয়র নেতারা জানান, আনিসুল হকের বিকল্প হিসেবে ডিএনসিসিতে স্বচ্ছ, ইমেজসম্পন্ন, দক্ষ, যোগ্য ও ব্যক্তিগতভাবে ক্যারিশম্যাটিক প্রার্থী খুঁজছে বিএনপি। সেক্ষেত্রে তাবিথ আউয়ালের নামই বেশি আসছে। তাকে বিএনপি প্রধানেরও বেশ পছন্দ। নির্বাচনী ব্যয় করার মতো মানসিকতায়ও এগিয়ে মিন্টু পরিবার। এ ছাড়া উত্তর শাখার প্রার্থী করার ক্ষেত্রেও বিএনপি বেশ সতর্ক। অভিজাত এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ নানা কারণেই দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজছেন বেগম জিয়া। বিএনপির বাইরে সরকারবিরোধী দল বলে খ্যাত নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মান্নাকেও বেছে নিতে পারে বিএনপি। তবে বিএনপির সিনিয়র এক নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, শেষ পর্যন্ত উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয় কিনা তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এক্ষেত্রে সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে বাকি দুই বছর পার করে দিতে পারে। কারণ, নির্বাচনে গেলে মোটামুটি সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভরাডুবি হবে। এ কারণেই সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রশাসক নিয়োগের কথা ভাবছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর