রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের এখন অভিভাবক কে

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

কী হবে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের? কে ধরবেন অভিভাবক নেতৃত্বের হাল? প্রবীণ নেতা, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে চট্টগ্রামজুড়েই এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মাঝে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর মধ্যেও এ নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টানা প্রায় চার দশক ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর রাজনীতিতে শীর্ষ নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। তার প্রয়াণে শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নয়, বিএনপিসহ অন্য বড় দলগুলোর নেতা-কর্মীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে শূন্যতা।

চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে মাঠের রাজনীতিতে মুখোমুখি হলেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ছিল বিএনপির শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ-আল নোমানের। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোতোয়ালি আসন থেকে এই দুই নেতা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত নোমান ঢাকা হতে ছুটে যান চট্টগ্রামে। এ প্রয়াণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে শূন্যতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক মন্ত্রী নোমান বলেন, ‘এমনিতেই বিভিন্ন দলে গণমুখী নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। মহিউদ্দিন চৌধুরী দলীয় সীমারেখা ছাড়িয়ে চট্টগ্রামের ও জাতীয় স্বার্থে রাজনীতিতে উচ্চকণ্ঠ হতে দ্বিধাবোধ করেননি। এমন নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।’ নোমান আরও বলেন, ‘লোভ-লালসাহীন সারা জীবন ত্যাগের রাজনীতি করে মহিউদ্দিন চৌধুরী তার সর্বজন গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে গেছেন।’ অন্যদিকে দলের মহানগর সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রয়াণে যে শূন্যতা তাতে হাল ধরছেন কে? এমন প্রশ্নে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘প্রবীণ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তার প্রয়াণে একটি যুগের, একটি কালের অবসান ঘটল। জনসম্পৃক্ততা বজায় রেখে মহিউদ্দিন চৌধুরী যে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তুলে ধরেছিলেন তার অনুপস্থিতিতে আমরা চেষ্টা করব দল ও সরকারের সুনাম বজায় রেখে মাঠে কাজ করতে।’ এখন প্রত্যেক নেতা-কর্মীরই এমন তাগিদ হওয়া উচিত বলে মনে করেন নুরুল ইসলাম বিএসসি। উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে সর্বশেষ মহানগর আওয়ামী লীগের ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি পুনর্নির্বাচিত হন সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হন বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে বিভক্তি প্রকাশ্য হলেও মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চিকিৎসার্থে সিঙ্গাপুর প্রেরণ থেকে শুরু করে সর্বশেষ শেষ বিদায় পর্যন্ত মহউদ্দিনের পাশে ছিলেন নাছির। মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিদায়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ষীয়ান জনমুখী নেতৃত্বের বিদায় ঘটল।

সর্বশেষ খবর