সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জিততেই হবে মনোভাব বাদ দিয়ে সমঝোতায় বসতে হবে

বাদল নূর

জিততেই হবে মনোভাব বাদ দিয়ে সমঝোতায় বসতে হবে

মনজুরুল আহসান খান

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করায় তাদের মধ্যে একগুঁয়েমি মনোভাব বেড়ে গেছে।

গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনে জিততেই হবে— এই মনোভাব বাদ দিয়ে সমঝোতায় বসতে হবে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ নমনীয় না হলে সংকট আরও প্রকট হবে। রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে সহনশীল হতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। মনজুরুল আহসান খান বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছরে দেশে একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। এর জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। দেশ স্বাধীন হয়েছিল জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারবে বলে। তা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এ বিধান বাতিল করে দিয়েছে। নির্বাচনী ত্রুটি সংশোধন না করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হবে। আর সে কারণে সংকট সমাধানে সরকারি দল আওয়ামী লীগকেই ভূমিকা নিতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র-সুশাসন হুমকির মুখে পড়বে। প্রবীণ রাজনীতিক মনজুরুল আহসান খান বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। তাদের হাতে অনেক ক্ষমতা। কিন্তু আগের নির্বাচন কমিশনগুলো নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে পারেনি। আমি প্রত্যাশা করি বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনের আগে তাদের মেরুদণ্ড খাড়া করে দাঁড়াবে এবং জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে। তিনি বলেন, মারামারি-কাটাকাটির রাজনীতি আমাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মাঠে বা প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ কমে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে অপসারণ করে বিচার বিভাগের মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। এই ব্যর্থতা সরকার কাটিয়ে উঠতে পারছে না। তিনি বলেন, ধনিক শ্রেণি আরও ধনী হচ্ছে। লুটপাটের রাজনীতি চলছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে হবে। সেটি একমাত্র বামপন্থি ও উদার গণতান্ত্রিক শক্তিরা পারে। সে জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সিপিবি-বাসদসহ সমমনা বামপন্থি দলগুলো নিয়ে একটি জোট গঠিত হয়েছে। এ জোট আরও বিস্তার লাভ করবে। জোটগতভাবেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।

সর্বশেষ খবর