সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের কিস্তি না দিতে পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তির টাকা দিতে না পেরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধূ জরিনা খাতুন (৩৫)। শনিবার গভীর রাতে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার সকালে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ভুমুরিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ঘরের দরজা বন্ধ করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তিনি। নিহত জরিনা খাতুন ভুমুরিয়া গ্রামের দিনমজুর আবদুর রউফের স্ত্রী। তারা চৌহালী উপজেলার পশ্চিম খাসকাউলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। যমুনার ভাঙনের শিকার হয়ে পরিবারসহ ভুমুরিয়া গ্রামে বসবাস করছিলেন। তাদের শিশুসহ ৫ সন্তান রয়েছে। চৌহালী থানার উপ-পরিদর্শক মোক্তার হোসেন জানান, নাগরপুর উপজেলার শাহজানী ভাড়রা ইউনিয়ন গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা অফিস থেকে ২০ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছিলেন জরিনা। এ ছাড়াও জরিনা খাতুন ব্র্যাক থেকে নেওয়া আরও ২০ হাজার টাকা ঋণের কিস্তি চালাতেন। সংসার চালানোর পাশাপাশি কিস্তি চালাতে মাঝে-মধ্যেই সমস্যায় পড়তেন তারা। এ অবস্থায় রবিবার সকালে গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তি দেওয়ার দিন ছিল। এ দিন কোনোভাবেই তিনি কিস্তির টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় নিজ ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগান। টের পেয়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আগুনে তার শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে রবিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি নাগরপুর থানার হওয়ায় তারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে জানান এসআই মোক্তার। এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ভাড়রা শাখা ম্যানেজার রঞ্জু আহমেদ জানান, টাকার জন্য তেমন চাপ দেওয়া হয়নি। জরিনার মৃত্যুর কথা শুনে আমরা তার বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়েছি। পাওনা টাকা মওকুফসহ বীমার টাকা পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। নাগরপুর থানার ওসি মো. মাঈন উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমাদের কেউ অবগত করেনি। তবে আমরা খোঁজখবর নিয়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখব।

সর্বশেষ খবর