শিরোনাম
সোমবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
সারা বছরের প্রস্তুতি দুই দলের

হ্যাটট্রিক জয়ই আওয়ামী লীগের প্রধান চ্যালেঞ্জ

রফিকুল ইসলাম রনি

হ্যাটট্রিক জয়ই আওয়ামী লীগের প্রধান চ্যালেঞ্জ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয়ই হবে নতুন বছরে আওয়ামী লীগের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রাক-প্রস্তুতি শুরু হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনের মাধ্যমে। বছরের শুরুতেই এই সিটিতে জয়ের মাধ্যমে শুভসূচনা করে আরও পাঁচ সিটিতে বিজয়ী হতে চায় দলটি। পাশাপাশি এর সঙ্গে বিভিন্ন উপনির্বাচন তো থাকছেই। এ লক্ষ্যকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হবে নতুন বছরে আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম। সূত্রমতে, সংগঠনকে শক্তিশালী, সরকারের উন্নয়ন এবং আওয়ামী লীগকে আরও জনপ্রিয় করতে বিএনপি-জামায়াতের ‘অপরাজনীতি’ জনগণের সামনে তুলে ধরতে জানুয়ারি থেকেই মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে দলকে আরও সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করতে মনোযোগ বাড়ানো হবে। গুরুত্ব দেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসনে। জানা গেছে, বছরের শুরুতেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনের সঙ্গে ও উত্তর-দক্ষিণের নতুন যোগ হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ডের সাধারণ ও ১২টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোট হবে। রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট হতে পারে বছরের মধ্যভাগে। ২০১৩ সালের ১৫ জুন চার সিটি ও ৬ জুলাই গাজীপুরে ভোট হয়। এবার মে মাসের মধ্যে এসব সিটি করপোরেশনে ভোট হবে। তার আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গাইবান্ধায় দুটি আসনে উপনির্বাচন হবে। নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিজয়ী হতে পারেন এমন কাউকেই বেছে নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে রংপুর সিটি থেকে শিক্ষা নেবেন শাসকদলের নীতি-নির্ধারকরা। একইভাবে সারা দেশে সাংগঠনিক সফর এবং নানা জরিপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে এমপি প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ। প্রচারণায় অংশ নেবেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী, সাধারণ সম্পাদক, প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা। জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরপর দুবার ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে একটি খসড়া তালিকা করা হয়েছে। দলের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছু আসনে নিশ্চিত জিতে আসার মতো বেশ কজন নতুন মুখকে আগেভাগেই সবুজ সংকেত দেওয়া হতে পারে। এসব নতুন মুখের মধ্যে আছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী নেতা, সাবেক পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা, আমলা ও রাজনৈতিক নেতা। দলের একাধিক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নির্বাচনী বছরের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে আগামী ৬ জানুয়ারি গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের দায়িত্ব বণ্টন করার পাশাপাশি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত, প্রচার-প্রচারণার কৌশল এবং সাংগঠনিক দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। একই সঙ্গে জেলা ও উপজেলায় সাংগঠনিক সফরের কর্মসূচি ঠিক হবে। এই প্রথমবারের মতো প্রেসিডিয়াম সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে। তারা কর্মিসভা, বর্ধিত সভা এবং জনসভার মাধ্যমে ঘর গোছাবেন। সাংগঠনিক সফরে প্রাধান্য দেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসনে। জেলা পর্যায়ে সমাধান করা না গেলে কেন্দ্রে ডেকে এনে অথবা দলীয় সভানেত্রীর হস্তক্ষেপে তা নিরসনের উদ্যোগ  নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, দলকে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আনাই হলো নতুন বছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই নতুন বছর পথ চলবে আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে জেলা সফর শুরু করার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতি মোকাবিলা করাও নতুন বছরের লক্ষ্য আওয়ামী লীগের। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০১৮ সাল আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জের বছর। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও ৬ সিটি এবং দুটি উপনির্বাচন রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা দেশের মানুষ উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। বছরের প্রথম থেকেই লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার কথাও জানান তিনি। সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। আমরা একটি নির্বাচনের পর আরেকটি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। দেশের তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ অনেক বেশি শক্তিশালী। বর্তমান সরকার গত ৯ বছরে যে উন্নয়ন করেছে, বিগত কোনো সরকার তা ২৮ বছরেও করতে পারেনি। সে কারণে আগামী নির্বাচনে দেশের তরুণ সমাজ ও নারী ভোটাররা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক বিজয় নিশ্চিত করবে।

সর্বশেষ খবর