শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
রাকসু

চলতি বছরেই দিতে হবে নির্বাচন

মর্তুজা নুর, রাবি

দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। রাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলো। চলতি বছরই রাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসন দায়সারা গোছের কথা বলছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে ছাত্র সংগঠনগুলো এমনিতেই সে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হবে। যেহেতু ডাকসু নির্বাচনের জন্য হাই কোর্ট নির্দেশনা দিয়েছে, তাই আমরা চাই অতি দ্রুত রাকসু নির্বাচনও হয়ে যাক।

 

প্রশাসন সময় ক্ষেপণ করছে

—গোলাম কিবরিয়া, সভাপতি, ছাত্রলীগ, রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেছেন, ‘আমরা সবসময় চেয়েছি ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক। সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নির্বাচনের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি। তবুও কেন এত দিন নির্বাচন হচ্ছে না, তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভালো বলতে পারবে। তারা নির্বাচন না দিয়ে সময় ক্ষেপণ করছে।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এ মন্তব্য করেন। গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসন দায়সারা গোছের কথা বলছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে ছাত্র সংগঠনগুলো এমনিতেই সে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হবে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো পরিবেশও আছে, যা নির্বাচনের উপযুক্ত। কিন্তু তারা নির্বাচন না দিয়ে সময় ক্ষেপণ করছে।’ কিবরিয়া বলেন, ‘যেহেতু ডাকসু নির্বাচনের জন্য হাই কোর্ট নির্দেশনা দিয়েছে, তাই আমরা চাই অতি দ্রুত রাকসু নির্বাচনও হয়ে যাক।’

চলতি বছরে নির্বাচন হলেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে এ নির্বাচন অবশ্যই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জামায়াত-শিবিরমুক্ত হতে হবে। নির্বাচনের জন্য রাবি ছাত্রলীগ প্রস্তুত আছে।’

 

নির্বাচন না দিলে আমরাও আদালতে যাব

—ইমতিয়াজ আহমেদ, সভাপতি, ছাত্রদল, রাবি

রাবি ছাত্রদলের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, ‘সারা দেশের মতো রাবি ক্যাম্পাসেও গণতন্ত্রের চর্চা উঠে গেছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ একক আধিপত্য কায়েম করছে। শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন না দিলে আমরাও আদালতের দ্বারস্থ হব।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে ক্ষিপ্ত। হলের সিট দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সবকিছুতেই ছাত্রলীগ জড়িত। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে মুক্তি চায়। অধিকার আদায়ে আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকতে চাই। আর এটা রাকসু নির্বাচন ছাড়া সম্ভব নয়। রাকসু নির্বাচনের ২৮ বছর পার হয়ে গেছে। আমরা এই দীর্ঘ সময় নির্বাচন থেকে বঞ্চিত। তাই আমরা চলতি বছরের মধ্যেই রাকসু নির্বাচন চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে তাহলে নির্বাচনের যে কোনো ফলাফল আমরা মেনে নেব।’

ইমতিয়াজ আরও বলেন, ‘রাকসু নির্বাচনের জন্য হাই কোর্টে রিট করার চিন্তাভাবনা করছি। ইতিমধ্যে অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হয়তো আইনের আশ্রয় নেব। নির্বাচন দিলে আমরা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে প্যানেল ঘোষণা করব।’

 

নির্বাচনের এখন উপযুক্ত সময়

—শাকিল হোসেন, সভাপতি, ছাত্র ইউনিয়ন, রাবি

রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এ এম শাকিল হোসেন বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর আগে অনেকবার বলেও নির্বাচন দেয়নি। নির্বাচনের জন্য বর্তমান সময়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে যথেষ্ট ভালো অবস্থায় আছে। নির্বাচন না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের দাবি ও অধিকার আদায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শাকিল দাবি করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করুক, তারা রাকসু নির্বাচন দিক। তাহলে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনকে পুলিশের দ্বারস্থ হতে হবে না। রাকসুর নির্বাচিত নেতারাই শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। রাবি প্রশাসন যদি রাকসু নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কিত কোনো দুশ্চিন্তায় ভোগে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি পরিবেশ পরিষদ গঠন করা হোক। এ পরিষদের কাজ হবে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ক্যাম্পাসে রাকসু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা।’

সর্বশেষ খবর