শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

যশোর রোডে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হাই কোর্টে স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়ক প্রশস্ত করার জন্য যশোর রোড-খ্যাত যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুই পাশে থাকা শতবর্ষী গাছ কাটার সিদ্ধান্তের ওপর ছয় মাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছে হাই কোর্ট। এই আদেশের ফলে যশোর রোডের ওই গাছগুলো এখন আর কাটা যাবে না বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। গতকাল এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আদেশের পাশাপাশি রুলও জারি করেছে আদালত।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাডভোকেট ছারোয়ার আহাদ চৌধুরী রিট আবেদনটি দায়ের করেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম মনিরুজ্জামান। আদেশের পর মনজিল মোরসেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদ ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুসারে পরিবেশ সংরক্ষণের দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চার লেন করার প্রকল্পে সরকারকে পরিবেশ সংরক্ষণে নিষ্ক্রিয় দেখা যাচ্ছে। সরকারের এ নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করে ওই সড়কের প্রাচীন গাছগুলোর ঐতিহ্যগত দিক তুলে ধরে এই রিট আবেদন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আদালত শুনানি নিয়ে ওই মহাসড়কের শতবর্ষী গাছগুলো কাটার ক্ষেত্রে ছয় মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছে। এ আদেশের ফলে গাছগুলো যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় থাকবে, কাটা যাবে না। আর গাছ সংরক্ষণে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং গাছগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রকল্প সংশোধন করে মহাসড়ক চার লেন করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে আদালত। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, সড়ক-মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, যশোরের জেলা প্রশাসক, বেনাপোলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বেনাপোল থানার ওসিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান মনজিল মোরসেদ। যশোর রোডের গাছ কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সম্প্রতি প্রশাসনকে উকিল নোটিস পাঠিয়েছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে যশোর রোড বলতে দমদম থেকে বনগাঁর পেট্রোপোল সীমান্ত পর্যন্ত মহাসড়ককে বোঝায়, ওই সড়কের পাশে গাছ কাটায় কলকাতা হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে তুলে ধরা হয় সেই নোটিসে।

জানুয়ারির শুরুতে যশোর জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে যশোর পর্যন্ত সড়ক চার লেনে সম্প্রসারণে দুই পাশের কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকেই সারা দেশে প্রতিবাদ ও সমালোচনা চলছে। এ গাছগুলো কাটার যুক্তি হিসেবে সড়ক সম্প্রসারণের কথা বলেছে সড়ক বিভাগ, কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন।

সর্বশেষ খবর