শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
শিরীন আখতার

সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা জরুরি

বাদল নূর

সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা জরুরি

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি বলেছেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি। আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি রংপুর ও কুমিল্লায় সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে সক্ষম হয়েছে। একইভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনও অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে কমিশনের কাছে জাতির প্রত্যাশা। এ ব্যাপারে কমিশনের আরও আন্তরিক হতে হবে। জনগণ যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থী বাছাই করে নিতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল রাজধানীর ইন্দিরা রোডে নিজের অফিসে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। শিরীন আখতার বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। এ ব্যাপারে  সরকারের কিছু করার নেই। কমিশনকেই আগামী নির্বাচনে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কারও দিকে তাকিয়ে থাকা বা কারও নির্দেশ মেনে কাজ করা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত। সাংবিধানিকভাবে তাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, তারা সেটি সঠিকভাবে পালন করবে বলে দেশবাসীর প্রত্যাশা। শিরীন আখতার বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে চাই। আমি আহ্বান জানাব স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। আগামী নির্বাচনে দেশবাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা পুনরায় জ্বালাও-পোড়াও, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান দেখতে চায়, নাকি দেশের উন্নয়ন চায়। স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশে পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের যে বীজ রোপণ করেছিল তা চিরতরে উপড়ে ফেলার জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে নির্বাচিত করতে হবে। বিএনপির নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের এ প্রস্তাব ষড়যন্ত্রের অংশ। নির্বাচন ভণ্ডুল করার প্রস্তাব। এ প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে বিএনপি ঘোলাটে অবস্থা তৈরি করতে চায়। অতীতে চারবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। তখনো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। সময় বদলেছে, চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন ভণ্ডুল করার সুযোগ বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত আর পাবে না। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ-সমঝোতার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। হরতাল-অবরোধ, নাশকতা-আগুন-সন্ত্রাস  দেশবাসী চায় না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে অতীতে বিভিন্ন অজুহাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। সাড়ে চারশ স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। পেট্রলবোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যানবাহন পুড়িয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাস করেছে। জনগণ এটি আর চায় না। আগামী নির্বাচন ঘিরে তারা সন্ত্রাস- নৈরাজ্য করলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে আমাদের প্রত্যাশা, বিএনপি এ পথ পরিহার করে নির্বাচনে অংশ নেবে। আর শান্তিপূর্ণ পথে বিএনপি নির্বাচনে না এলে চিরদিনের জন্য অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। বিএনপিকে মামলায় জড়িয়ে চাপে রাখা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। এটি আইনের বিষয়, মহাজোট বা বর্তমান সরকারের বিষয় নয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এলে গত ৯ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তার ধারা অব্যাহত থাকবে। আগামী নির্বাচনে মহাজোট সরকারের অবশ্যই বিজয়ী হতে হবে। বিজয় না হলে দেশে উন্নয়নমূলক যেসব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে তা মুখ থুবড়ে পড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর