শনিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপি ছাড়া ভোটের জন্য তড়িঘড়ি রায় হচ্ছে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলায় ‘নেতিবাচক’ রায় হলে পরিণতি ‘ভয়াবহ’ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল ঢাকায় পৃথক তিন অনুষ্ঠানে নেতারা এ হুঁশিয়ারি দেন। বিকালে সদ্য প্রয়াত ঔপন্যান্সিক শওকত আলীর বাসায় পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপিকে ছাড়া তড়িঘড়ি নির্বাচনের জন্য সরকার রায় দিচ্ছে। দ্রুততার সঙ্গে খালেদা জিয়ার মামলা শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। তারা আগামী নির্বাচন করতে চান বিএনপিকে বাদ দিয়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রায়টা এখনো হয়নি। আইনগতভাবে নীতিগতভাবে রায় ঘোষণা হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া, সেইভাবে বলতে পারব না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই নিয়ে আজকে কথা বলেছেন। এই কথা বলা কোনো মতেই সঙ্গত নয়। তিনি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন যা দিয়ে তিনি  গোটা আইনশৃঙ্খলা পরিবেশকে...। এ থেকে এটা পরিষ্কার বুঝা যায় যে, তারা কী চিন্তা করছেন?’ জাতীয় প্রেস ক্লাবে পৃথক এক অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন ‘৮ ফেব্রুয়ারি  যেটা আমরা আশঙ্কা করছি,  সেদিন নেতিবাচক  কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের প্রভাবে যদি আদালত থেকে প্রকাশ পায় তাহলে তখন থেকে এই সরকারের পতনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু করবো  ঘোষণা দেই বা না দেই এমন কিছু ঘটবে না এমন নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি না। সেই পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ।’ গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম’ এর উদ্যোগে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে পৃথক আরেক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে প্রতিশোধ নিতে চায় বলেই সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে এর প্রতিশোধ  নেওয়া হবে।’ খালেদা জিয়ার মামলার রায় ‘দ্রুততার সঙ্গে করানো হচ্ছে’ অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘নজিরবিহীন তাড়াহুড়ার মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে এই মামলা শেষ করার  চেষ্টা হচ্ছে। দেশনেত্রীর আইনজীবীরা পরিশার করে বলেছেন যে, জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড। এ কথায় তারা (ক্ষমতাসীন) কর্ণপাত করছেন না। তারা ডিটারমিনড যে, তারা আগামী নির্বাচন করতে চান বিএনপিকে বাদ দিয়ে এবং সেজন্যই তাড়াহুড়া করে বিচার কাজ শেষ করা এবং এ সব কমেন্ট করা। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করিনি। তাহলে কোথায় যাবেন?’ বিকালে বিএনপি মহাসচিব রাজধানীর টিকাটুলীর  কে এম দাস  লেনের ‘বিরতি ভিলা’ বাসায় গিয়ে প্রয়াত ঔপন্যাসিক শওকত আলীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তার বড়  ছেলে আসিফ শওকত কল্লোল, তার স্ত্রী ফারজানা আফরোজ পারুলসহ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের  খোঁজ-খবর নেন। মির্জা ফখরুল যে কক্ষে শওকত আলী থাকতেন সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে তার স্মতির প্রতি সন্মান জানান।

 এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক শওকত আলী আমার শিক্ষকই ছিলেন বলা যায়। আমি যখন স্কুলের ছাত্র তখন তিনি আমার জন্মভুমি ঠাকুরগাঁও কলেজে অধ্যাপনা করতেন। তিনি আমার পড়া জগতকে পাল্টিয়ে দিয়েছিলেন সেই  শৈশবে। ভালো সাহিত্য পড়তে এবং সৃজনশীল  লেখা পড়তে, পৃথিবী ও মানুষকে জানবার জন্যে যে সাহিত্য,  সেই সাহিত্যপাঠে আমাকে মনোযোগী করেছে। তিনি আজীবন দেশের মানুষের কাছে বেঁচে থাকবেন তার সাহিত্যের মধ্য দিয়ে, তার লেখার মধ্য দিয়ে।’

সর্বশেষ খবর