বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
সংসদে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা

মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ‘অভিজাত এলাকায় মাদকের হাট’ শীর্ষক সংবাদ সংসদে স্পিকারের দৃষ্টিতে আনেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ। গতকাল সন্ধ্যায় পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মাদকের ছড়াছড়ি। রমনায় ৭৪, লালবাগে ৯০, ওয়ারলেসে ১৫০, মিরপুরে ১২৫, গুলশানে ১১২, উত্তরায় ৬৮, মতিঝিলে ১২২ ও তেজগাঁওয়ে শতাধিক স্পট রয়েছে। কাজী ফিরোজ রশীদের বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে এমপিদের সোচ্চার হতে বলেন। তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা সোচ্চার হোন। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। মাদকমুক্ত দেশ গড়ে তুলব।’ স্পিকারের উদ্দেশে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘কখনো এসব এলাকায় দিনের বেলা গেলে দেখবেন অনেক শিশু বিভিন্ন পন্থায় মাদক গ্রহণ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জুতার একটা বিশেষ কষ। এটা পলিথিনের মধ্যে নিয়ে শিশুরা নেশা করে। ক্ষুধার যন্ত্রণায় এরা এসব করে। আমাদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় যদি ঢাকার রাস্তা থেকে এমন হাজারখানেক শিশুকে তুলে নিয়ে আনসার-ভিডিপিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দেখভালের জন্য দেয়, তাহলে এদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে, শহরের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিও দূর হবে, শহর পরিষ্কার থাকবে। কারণ এরাই ছিনতাই করে, শহর অপরিষ্কার করে। এদের কারণে রাস্তায় চলা দায়।’ স্পিকারকে উদ্দেশ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যদি হাই কোর্ট মাজার বা গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারে কিংবা কমলাপুর স্টেশনে যান তাহলে হাজার হাজার শিশুসহ অন্যদের দেখতে পাবেন। এদের দেখবে কে? এরা তো আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে। কাউকে না কাউকে দেখতে তো হবে।’ তিনি বলেন, ‘গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, পল্লী অঞ্চলে এখন ইয়াবা পাওয়া যায়। এ মাদক এতটাই সহজলভ্য হয়ে গেছে। এজন্য বার বার আপনি আমাকে নোটিস দিতে বলেন। নোটিস দিলে কী হবে। এখানে সবাই তো শোনে, ব্যবস্থা তো নিতে হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আছে, তারা যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে কে নেবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি বলেছিলাম ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দিতে যে, আমরা রাস্তায় কোনো মাদকসেবী শিশু দেখতে চাই না। সবার চোখের সামনে এরা এগুলো করে। এসব পত্রিকায় আসে।’ ফিরোজ রশীদ বক্তব্যদানকালে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাত্ক্ষণিকভাবে কোথায় কোথায় এসব হয় আবার উল্লেখ করতে বলেন। তখন ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘হাই কোর্ট, কমলাপুর রেল স্টেশন, নয়াপল্টন এসব এলাকায় গেলে এই মুহূর্তে (গতকাল সন্ধ্যায় ৭টায়) কমপক্ষে ৫০০ মাদকসেবী পাওয়া যাবে। এ ছাড়া গুলিস্তানের পার্কেও এসব লোকজন পাওয়া যাবে। পার্কটির এখন উন্নয়নকাজ চলছে।’ এরপর সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লোর নিয়ে বলেন, ‘সংসদ সদস্য যেসব বিষয় বলেছেন সেগুলো আমি নোট নিয়ে রেখেছি। আজকেই (অভিযান) চালাব। কারণ আমরা চাই না এসব ঘটুক। আমাদের সংসদ সদস্য যারা আছেন তাদেরও এলাকার দিকে একটু বিশেষ নজর দিতে হবে।’

সর্বশেষ খবর