বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আজ সিলেট থেকেই এরশাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠনের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে আজ পুণ্যভূমি সিলেট থেকে এ প্রচারণা শুরু করবেন। এর দুই দিন আগে সিলেট থেকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। জাপা সূত্র জানায়, সিলেট থেকে প্রচারণা শুরু করে সারা দেশে একের পর এক কর্মসূচি পালন করবেন এইচ এম এরশাদ। এর অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলা, ৩ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা, ৪ ফেব্রুয়ারি রংপুরে সমাবেশ করবেন। পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রেসিডিয়াম বৈঠক শেষে তিনি আরও কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

এ ব্যাপারে পার্টি মহাসচিব এ বি এম রুহল আমিন হাওলাদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আজ সকালে হেলিকপ্টারযোগে পল্লীবন্ধু এরশাদসহ আমরা সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে যাচ্ছি। আগামী নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। জনগণ পরিবর্তন চায়, জাতীয় পার্টি তথা পল্লীবন্ধু এরশাদই এ পরিবর্তন এনে দিতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় জনসভা করার। আমরা নয়টি বিভাগীয় শহরে বড় ধরনের জনসমাবেশ করব। বিভাগীয় প্রতিটি সমাবেশেই আমাদের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বক্তব্য দেবেন। আমাদের প্রতিটি সংসদীয় আসনেই একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন। তবে যারা কর্মীবান্ধব এবং দল ও এরশাদের প্রতি কমিটেড, তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।’ দলীয় সূত্র জানায়, আজ পার্টি চেয়ারম্যানের সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ , জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। জাতীয় পার্টির সিলেট জেলা আহ্বায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান বলেন, ‘মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। এরপর সার্কিট হাউসে জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। পার্টি চেয়ারম্যানের এ সফর সফল করার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’ জানা গেছে, ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এবং একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছিল জাতীয় পার্টি। কিন্তু একুশের বইমেলা ও ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলটি এ সমাবেশ থেকে পিছু হটে। তবে বসে থাকতে চায় না জাতীয় পার্টি। এরই অংশ হিসেবে সিলেট থেকে কর্মসূটি শুরু করেছে। এরশাদ ঢাকার বাইরে সংগঠন শক্তিশালী করতে চান। প্রতিটি সমাবেশে পার্টি চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারাও তার সফরসঙ্গী হবেন। ৫ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডিয়ামের বৈঠক শেষে সারা দেশের সাংগঠনিক সফরের তারিখ নির্ধারণ করা হবে; যা আগামী রমজান পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এইচ এম এরশাদের উপদেষ্টা কাজী মামুন বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া এবং সরকার গঠন করা। জাতীয় পার্টি সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। জাতীয় পার্টি অতীতে ক্ষমতায় ছিল। জাতীয় পার্টি জনগণের কাছে পরীক্ষিত বন্ধু। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ আসনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করব এ আশা রাখি।’

এমপি বাবলার সুস্থতা কামনা : জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপির সুস্থতা কামনা করে কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করেছে নগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টি। গতকাল আমেরিকায় চিকিৎসাধীন সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার হার্টের সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। গতকাল বাদ আসর অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন মিলনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

সর্বশেষ খবর