বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

সরকারি হাসপাতালে মানুষ বঞ্চিত, প্রতারিত বেসরকারিতে

----- ইফতেখারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সরকারি হাসপাতালে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে মানুষ, আর বেসরকারিতে হচ্ছে প্রতারিত। উচ্চ মুনাফাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকাশ ঘটছে বেসরকারি চিকিত্সাসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর। সেবাগ্রহীতাকে জিম্মি করে আদায় করা হচ্ছে মুনাফা। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ‘বেসরকারি চিকিত্সাসেবা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন টিআইবির প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার ও মো. জুলকার নাইন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল এবং টিআইবির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের। সুলতানা কামাল বলেন, ‘বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্যসেবায় তদারকির অভাব রয়েছে। এত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সরকারি হাসপাতালের পক্ষে সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানগুলোয় তদারকির কোনো চিহ্ন দেখা যায় না। রাষ্ট্রের তদারকি করতে উদাসীনতা রয়েছে নাকি কোনো প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে তা আমার জানা নেই।’ রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক স্বার্থ বাদ দিয়ে এই বেসরকারি হাসপাতালের সেবার মান তদারকিতে নিয়ন্ত্রণ কমিশন গঠন করার দাবি জানান তিনি। প্রতিবেদনে বেসরকারি চিকিত্সাসেবায় নানা অভিযোগ এবং সমস্যা সমাধানে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে কমিশনভিত্তিক বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। যেখানে চিকিত্সা ব্যয়ের ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন সরকারি-বেসরকারি চিকিত্সক, সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মী, রিসিপশনিস্ট ও দালাল চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে। রোগ নির্ণয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডাক্তার ও দালালদের ১৫ থেকে ৫০ ভাগ কমিশন চুক্তি রয়েছে। উচ্চ মুনাফার জন্য বেসরকারি চিকিত্সাসেবা কেন্দ্রগুলোয় ব্যবসা চলছে। সেবাগ্রহীতাকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় হচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিধিমালা না থাকা এবং আইনের হালনাগাদ না হওয়াকেই স্বাস্থ্য খাতের এ সমস্যার জন্য দায়ী করা হয় প্রতিবেদনে। প্রসূতিসেবা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রসবের দিনের অনেক আগে প্রসব করানোর অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার ৮০ শতাংশ। এ হার সরকারি হাসপাতালে ৩৮ ও এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ২৮ শতাংশ। প্রতিবেদনে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোয় অদক্ষতা এবং অনিয়ম বেশি বলে উল্লেখ করা হয়।

সর্বশেষ খবর