ফিরে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার বিশালসংখ্যক রোহিঙ্গাকে শুধু আশ্রয় ও খাদ্যসংস্থানই নয়, তাদের নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অবিশ্বাস্য কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। এখন আমাদের কর্তব্য হলো বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা করা এবং স্বেচ্ছায় মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরা নিশ্চিত করা।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকবে ব্রিটেন।’ গতকাল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি কুতুপালং ও বালুখালীর ক্যাম্পগুলোতে ঘুরে ঘুরে মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের বর্ণনা শোনেন। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নির্যাতনের বর্ণনা শোনার আগে-পরে তাদের জন্য নেওয়া চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পৌঁছানো বরিস জনসন ফিরে আসেন বিকালে। সন্ধ্যায় তিনি মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। দ্বিপক্ষীয় সফরে শুক্রবার ঢাকা এসেছিলেন বহুল আলোচিত ব্রিটিশ রাজনীতিক বরিস জনসন। গতকাল সফরের দ্বিতীয় দিন বেলা পৌনে ১টার দিকে কক্সবাজার পৌঁছান বরিস জনসন। পরে সড়কপথে বেলা দেড়টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে যান তিনি। সেখানে নতুন করে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর উখিয়ার বালুখালী-১ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আওএম) হাসপাতাল পরিদর্শন করেন তিনি। পরে তিনি উখিয়ার বালুখালী-২ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। সেখানে এইএনএফপিএ পরিচালিত শিশুবান্ধব কেন্দ্রে শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় তার সঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম চৌধুরী ও ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকর্তা ও দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিকালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আসেন। সন্ধ্যায় মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন বরিস জনসন। এর আগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বরিস জনসন জানান, ‘রোহিঙ্গাদের দুর্দশা এবং তাদের যে দুঃখ-কষ্ট সইতে হয়েছে, তা আমাদের সময়ের সবচেয়ে বেদনাদায়ক মানবিক বিপর্যয়গুলোর অন্যতম। এটা একটা মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়, যা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঠিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সহনশীলতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। এই মানবিক সংকটের সুরাহায় সবাই মিলে কীভাবে কাজ করা যায় সে বিষয়ে আমি স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও অন্য আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলব।’