বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুর্নীতির মূল উৎস তদবিরবাজরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতির মূল উৎস তদবিরবাজরা

ইকবাল মাহমুদ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, তদবিরবাজরাই দুর্নীতির মূল উৎস। তারা পদ্ধতি ভাঙতে চায়। সংবিধান লঙ্ঘন করে অনুপার্জিত আয় করতে চায়। কিন্তু মানুষ তদবিরবাজদের ছাড় দিতে চায় না। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। ক্ষমতাবানদের বিশেষ প্রভাব নির্মূল করার এখনই সময়।

তিনি গতকাল চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা, দুর্নীতির অভিযোগের প্রকৃতি’ শিরোনামে চাঁদপুর জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মাঠপর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধবিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। আলোচনা সভার শুরুতে দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. জাফর ইকবাল, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, ভূমি রেকর্ড জরিপ, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএসহ বিভিন্ন দফতরের যেসব অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে আসে—  এর একটি নমুনা পেপার উপস্থাপন করেন। জেলা প্রশাসক আবদুস সুবর মণ্ডলের (যুগ্ম সচিব)  সভাপতিত্বে এ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তারসহ জেলা পর্যায়ের অন্য কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ও হয়রানিমুক্তভাবে সরকারি পরিসেবা প্রদান করা আমলাতন্ত্র ও জনপ্রতিনিধিদের কোনো দয়ার বিষয় নয়। এটা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, অনেকেই বলেন, আমাদের রাজনীতি আছে, উন্নয়ন আছে, নৈতিকতা আছে, সততা আছে, মূল্যবোধ- সবই আছে; কিন্তু দুর্নীতি, তদবির, অবৈধ প্রভাব কি নেই? দুর্নীতির ব্যাপকতা এভাবে চললে অনেক অর্জনই বিসর্জন হয়ে যাবে। আমরা এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে চাই। দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এক্ষেত্রে অভিভাবক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, সবাইকেই দোষ নিতে হবে। এভাবে যারা সার্টিফিকেট নিচ্ছেন তাদের দক্ষতা, সক্ষমতা ও মননশীলতা ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দেশে সক্ষম শিক্ষিত মানুষের চাকরির অভাব নেই। যদি অভাব থাকত তাহলে প্রায় লক্ষাধিক বিদেশি বাংলাদেশে চাকরি করতে আসত না। আমাদের দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক স্কুল হয়েছে, স্কুলে যাওয়ার পাকা রাস্তা হয়েছে, শিক্ষা উপকরণ আছে, শিক্ষক আছে- কিন্তু শ্রেণিকক্ষে কি শিক্ষা আছে? শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা থাকলে আমাদের সন্তানরা কেন কোচিং সেন্টারে যাচ্ছে? তিনি এক্ষেত্রে প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিদের সম্মিলিতভাবে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি। তিনি উল্লেখ করেন, সময় এসেছে। মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ঘুষ বন্ধ হবেই। তিনি বলেন, ভুল করে দুর্নীতি করা কিংবা ইচ্ছাকৃত দুর্নীতি করার পার্থক্য দুর্নীতি দমন কমিশন বোঝে। যেমন কর্ম করবেন তেমন ফল পাবেন। নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ বিকাশের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন দেশের প্রায় ২২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সততা সংঘ গঠন করেছে। উত্তম চর্চার বিকাশে তাদের নিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর