শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মিয়ানমার বাহিনীর রোহিঙ্গাবিদ্বেষী প্রচার সংকটের কারণ

--অ্যামনেস্টি

প্রতিদিন ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক প্রচারণা সেখানকার সমাজকে বিদ্বেষী করে তুলেছে। সমাজের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়া সেই বিদ্বেষকেই রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের কারণ মনে করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা তাদের অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে বলছে, বিশ্বনেতাদের ঘৃণাপ্রসূত রাজনৈতিক প্রপঞ্চ সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য উসেক দিয়েছে।

১৫৯ দেশের তথ্যকে ভিত্তি করে তৈরি করা মিয়ানমারের সংকট এবং রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে সমাজে বাড়তে থাকা বিদ্বেষের ফল বলে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার প্রশ্নে নেতৃত্বের শূন্যতাকেও সংকটের কারণ মনে করছে তারা। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের জবাবদিহির মুখোমুখি দাঁড় করানোর তাগিদ দিয়েছে। গত বছর ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও জাতিসংঘের এক সামপ্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সব পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা অভিযান শুরু হয়েছিল।

সরেজমিন কক্সবাজার পরিদর্শন করে জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেখানকার শরণার্থী শিবিরে সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, রাখাইনে সেনাবাহিনীর তাণ্ডব শুরু হয়েছিল ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চেকপোস্টে হামলার অন্তত তিন সপ্তাহ আগে থেকে।

ঘটনার আট দিন আগে ১৭ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর খবর প্রকাশিত হয়েছিল। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরাও আরসার হামলাকে রাখাইনে সেনা অভিযানের কারণ মনে করেন না। বরং সেনা অভিযানে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ আরসার হামলার পাটাতন তৈরি করেছে বলে মনে করেন তারা। অ্যামনেস্টির মহাসচিব সলিল শেঠি বলেন, মিয়ানমারের সমাজ সংখ্যালঘুদের প্রতি ‘বিদ্বেষ’, ‘ভীতি ছড়ানো’ এবং তাদের ‘বলির পাঁঠা’ বানানোতে উৎসাহিত। ‘রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের সামরিক প্রচারণা’কেই সমাজের ওই পরিণতির জন্য দায়ী করেছে তারা। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে এখনো বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ৬ হাজার ৫০০ মানুষ দুই দেশের মধ্যবর্তী নো-ম্যানস ল্যান্ড তমব্রুতে অবস্থান করছে। তমব্রুতে থাকা রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে দেশটির উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল অং সো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সতর্কতা জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, রাখাইনে ফিরে না এলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর