শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

সরকারের পাতা ফাঁদে পা দেব না

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের পাতা ফাঁদে পা দেব না

অতীতের  চেয়ে বিএনপি এখন অনেক বেশি শক্তিশালী বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘তাদের (সরকার) অনেক আশা ছিল, দেশনেত্রীকে আটক করলেই বোধহয় বিএনপি ভেঙে যাবে। বিএনপি ভাঙেনি, বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে। আমরা জানি তারা (সরকার) আমাদের অনেক উসকানি দেবে, ফাঁদ পাতবে। কোনো ফাঁদে  যেন আমরা পা না দেই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমরা দেশনেত্রী  বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং একই সঙ্গে গণতন্ত্রকে মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ।’

গতকাল বিকালে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান ‘শহীদ দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন একটা পরীক্ষার সময়। এত বড় পরীক্ষা আগে জাতিকে কখনো দিতে হয়নি। আজকে আমরা এই  যে সংগ্রাম করছি, তা শুধু বিএনপির জন্য নয়। এই সংগ্রাম শুধু বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার সংগ্রাম নয়। এই সংগ্রাম  দেশ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবার সংগ্রাম।’  মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আমাদের তরুণ নেতা যিনি গঠনতন্ত্রভাবে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়  চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আমরা সব নেতা একত্রিত হয়ে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার নেতৃত্বে দলকে পরিচালনা করছি। এখন বিএনপি আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ ও আগের চেয়ে অনেক  বেশি শক্তিশালী।’ দলের প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, গোলাম আকবর খন্দকার, মনিরুল হক চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী প্রমুখ।

মহানগর উত্তরের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা শেষে কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন ‘কারাবন্দী খালেদা জিয়া’কে নিয়ে একটি গান পরিবেশন করেন।

সারা দেশে সব নেতা-কর্মীর ওপর সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতন-গ্রেফতারের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চেয়ারম্যান-সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত এমন কোনো নেতা-কর্মী নেই যার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়নি। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই অবস্থা চলতে পারে না। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের, তিনি বক্তব্যে বলেছিলেন, তোমরা আন্দোলন করবে, সেই আন্দোলন হবে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ। ধৈর্য ধরবে, ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি  মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করতে হবে।’

আলোচনা সভা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, শনিবার (আজ) রাজধানীতে বেলা ১১টায়  কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। ২২  ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে দলটি গত বৃহস্পতিবার এই কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার  মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের সব খায়েশ তা সম্পূর্ণ বুমেরাং হয়ে  গেছে। আমরা বলতে চাই, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে  দেশনেত্রী মুক্তি পাবেন। এরপর আমাদের বড় আন্দোলন সামনে আছে।  দেশ একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার কায়েম করে  সেই সরকারের অধীনে দেশনেত্রীকে নিয়ে বিএনপি আগামী নির্বাচনে যাবে। এর জন্য আন্দোলন-সংগ্রামের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা আমাদের সামনে বড় লড়াই রয়েছে, সেই লড়াইয়ে  সবাইকে প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।’

 

সর্বশেষ খবর