রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডাবল মার্ডার আসামির সঙ্গে ওসির বৈঠক

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সিআরবির আলোচিত ‘ডাবল মার্ডার’ মামলার অন্যতম প্রধান আসামি অজিত বিশ্বাস। হত্যা মামলার এ আসামির বিরুদ্ধে আদালত ওয়ারেন্ট জারি করায় পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে তাকে। কিন্তু পুলিশ কাগজে-কলমে তার হদিস না পেলেও তিনি নিয়মিত পুলিশের সঙ্গে বসেন আড্ডায়। শুধু তা-ই নয়, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার ওসি হিমাংসু কুমার দাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোডও করেছেন তিনি। নগরীর আলোচিত সিআরবির ‘ডাবল মার্ডার’ মামলার এ আসামির পুলিশের সঙ্গে দহরম মহরমের এই ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির সঙ্গে পুলিশের ওঠাবসা করা অবশ্যই দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ কোনো পুলিশ সদস্য করে থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বোয়ালখালী থানার ওসি হিমাংসু কুমার দাস বলেন, ‘বোয়ালখালীতে যোগদানের পর অনেকেই ফুল নিয়ে আমাকে বরণ করেছে। এর মধ্যে হয়তো অজিতও রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে অজিতকে চিনি না।’ নগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সিআরবির জোড়া হত্যা মামলার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন অজিত বিশ্বাস। পরে মামলার ধার্য তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় এক বছর আগে নিম্ন আদালত জামিন বাতিল করে। একই সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়। এখন আমরা অজিতকে গ্রেফতারের জন্য খুঁজছি।’ জানা যায়, বোয়ালখালী উপজেলার একটি সংস্থার একাংশের নেতা অজিত বিশ্বাস। পুলিশের খাতায় এক বছর ধরে পলাতক হলেও নগরী ও জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত ওঠাবসা তার। থানায় বিভিন্ন তদবির নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডায় মেতে ওঠেন অজিত। সম্প্রতি তিনি বোয়ালখালী থানায় গিয়ে ওসির সঙ্গে দীর্ঘ আড্ডায় মেতে ওঠেন। পরে ওসির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সেই ছবি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন। আলোচিত একটি ডাবল মার্ডার মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হয়েও পুলিশের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার পর চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবিতে রেলওয়ের দরপত্র নিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলেই যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত ও আট বছর বয়সী শিশু আরমান হোসেন টুটুলের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আগের বিভিন্ন দরপত্রের ভাগের টাকা পাওনা থাকায় সাজু পালিত ও অজিত বিশ্বাসের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন সাজু সিআরবি এলাকায় একটি টং দোকানে পুরি খাচ্ছিলেন। এ সময় অজিত কোমরে থাকা অবৈধ পিস্তল বের করে সাজুর মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করেন। পিবিআইর দেওয়া অভিযোগপত্রে অজিতকে প্রধান আসামি করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর