বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগে ফের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কুয়েত। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ আল জাররাহ এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দ্রুত তা কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন। কুয়েতের দৈনিক আল জারিদার রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে গালফ নিউজ। খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর বাংলাদেশিদের নানা অনিয়ম ও কর্মক্ষেত্রে পাচারকারীদের নিয়ম লঙ্ঘনের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূলত গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এ অনিয়ম হয়েছে। অনিয়মের মাধ্যমে রেসিডেন্সি পারমিটের সংখ্যাও ব্যাপক হারে বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। আরবি ভাষার দৈনিক জারিদার বরাত নিয়ে গালফ নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় কুয়েত। এর পরপরই এই অনিয়মের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কুয়েতের নিরাপত্তা সংস্থার এই বিষয়ে প্রতিবেদন দেয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নিরাপত্তা সংস্থাটি বলেছে, বিদ্যমান কঠোর নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম ঘটছে। সংস্থাটির দেওয়া এই প্রতিবেদনের জেরে ফের বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুয়েত। পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক নিচ্ছে কুয়েত। ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক নেয় দেশটি। তবে ২০০৭ সালে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে দেয় কুয়েত। নিয়োগে অনিয়ম ও বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিয়োগ বন্ধ করা হয়। ২০১৪ সালে কুয়েত ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। ফের উপসাগরীয় এই দেশটিতে কাজ করার সুযোগ পায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা। ২০১৬ সালের মে মাসে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে অনিয়মের তথ্য উঠে আসার পর আবারও বাংলাদেশ থেকে পুরুষ গৃহকর্মী নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কুয়েত। পরে কুয়েত সরকার দেশটির নাগরিকদের বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে নতুন শর্ত আরোপ করে। ওই সময় বলা হয়, প্রত্যেক কুয়েতি নাগরিক যদি কোনো দেশের একজন পুরুষ গৃহকর্মী নিযুক্ত রাখেন; তাহলে ওই দেশের আর কোনো শ্রমিককে নিয়োগ দিতে পারবেন না। নতুন শর্তে বলা হয়, নিয়োগদাতার অবশ্যই নিজস্ব বাড়ি থাকতে হবে কুয়েতে। ২০১৬ সালে কুয়েতে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ। এবারও সব ধরনের শ্রমিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
