মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
আহত মেহেদীর রোমহর্ষক বর্ণনা

বিমানটি ভূমি স্পর্শ করেই ছিটকে পড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেটি ছিল তাদের প্রথম বিদেশ ভ্রমণ। বিমানের পেছনের দিকের পাঁচটি আসনে পাশাপাশি বসেছিলেন সবাই। মেহেদী বসেছিলেন জানালার পাশে। সবাইকে সিটবেল্ট বাঁধতে বলা হলো। সবাই সিটবেল্ট বাঁধলেন। ঘোষণা দেওয়ার পরপরই মেহেদী জানালা দিয়ে দেখেন ল্যান্ডিং গিয়ার বের হয়েছে। এ সময় বিমানটি অনেক নিচু দিয়েই উড়ছিল বেশ কয়েক মিনিট ধরে। সবই স্বাভাবিক ছিল। এটি বিধ্বস্ত হওয়ার ১০-১৫ মিনিট আগের কথা। তখন অবতরণের ঘোষণা দেওয়া হয়। ল্যান্ডিং গিয়ার দিয়ে প্রথম ভূমি স্পর্শ করে বিমানটি। সঙ্গে সঙ্গেই ছিটকে পড়ে সেটি। ভেঙে যায় বিমানের সামনের কাচ। মেহেদি ও তার স্ত্রী স্বর্ণা ওই পথেই বের হন। নেমেই দেখেন নিচে পড়ে আছেন বেশ কয়েকজন। এরপর উদ্ধারকারীরা এসে তাদের নিয়ে যান হাসপাতালে। মেহেদীর ঘাড়, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগে। গতকাল আর্মি স্টেডিয়ামে বিমান বিধ্বস্তে নিহতদের জানাজায় অংশ নিয়ে এই মর্মস্পর্শী বর্ণনা দেন মেহেদী হাসান। জানাজায় অংশগ্রহণ শেষে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। নেপালে স্ত্রী ও ভাইয়ের পরিবারসহ পাঁচজন মিলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এমন ভয়াবহ পরিণতি হবে তা কল্পনাতেও ছিল না।

তাদের তিনজন আহতাবস্থায় দেশে ফিরলেও না ফেরার দেশে চলে যান ভাই প্রিয়ক ও তার মেয়ে প্রিয়ংময়ী। হাতে স্যালাইনের ক্যানোলা ও ঘাড়ে আলাদা সাপোর্ট নিয়ে হুইল চেয়ারে করে মেহেদী উপস্থিত হন জানাজায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই আর বাবুটাকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছি।’ ১২ মার্চ ইউএস-বাংলার বিএস-২১১ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে নিহত হন ২৬ জন। আহতদের মধ্যে ডা. রেজওয়ান ও ইমরানা কবির হাসিকে সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। মেহেদী ছাড়াও তার স্ত্রী সৈয়দ কামরুন্নাহার স্বর্ণা, ভাই ফারুক হোসেন প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানী, শাহরিন আহমেদ, শেখ রাশেদ রোবায়েত, শাহিন বেপারী ও সর্বশেষ কবির হোসেনকে দেশে এনে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে। আর ইয়াকুব আলী এখনো কাঠমান্ডুতে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ খবর