মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রথম জানাজা নেপালে

দূতাবাসে ভিন্ন এক সকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারি সারি কফিন। একের পর এক নামানো হচ্ছে গাড়ি থেকে। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর বসুন্ধরা এলাকায় তখনো ভোরের আলো ঠিকমতো ফোটেনি। অশ্রুসিক্ত চোখে দাঁড়িয়ে আছেন শখানেক স্বজন। বসুন্ধরার এই ভবনটি বাংলাদেশের দূতাবাস। সাধারণত সকাল ৯টায় খোলা হয় এর দ্বার। গেটের সামনে দাঁড়ানো থাকে অস্ত্রধারী নিরাপত্তাকর্মী। কিন্তু স্বাভাবিক সেই চিত্র গতকাল ছিল না। রাসভারী কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিবর্তে তখন সবাই ব্যস্ত ছিল জানাজার আয়োজন নিয়ে। কালো চাদর জড়িয়ে প্রশাসনিক ভবনের গেটে দাঁড়ানো ছিলেন রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে সামস। টলমল করছিল তার চোখ। যে কোনো সময় ভেঙে পড়বেন কান্নায়। গত এক সপ্তাহ অমানুষিক যুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে নেপালে এসে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের খুঁজতে ছিল তার এই লড়াই। একদিকে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, অন্যদিকে হাসপাতালের মর্গে খুঁজেছেন পুড়ে যাওয়া স্বদেশিদের। গতকাল সকালে দুর্ঘটনায় নিহত এই ২৩ মরদেহ পাঠাচ্ছিলেন ঢাকায়। দীর্ঘ কূটনৈতিক জীবন কাটানো এই রাষ্ট্রদূতের এটি ছিল এক অন্যরকম সকাল। ৮টা ৪০ মিনিটে দূতাবাস চত্বরে ২৩টি কফিন সামনে রেখে জানাজায় দাঁড়িয়ে যান দূতাবাসের কূটনীতিক, দূতাবাস কর্মকর্তা এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের কর্মকর্তারা। সেখানে নিহতদের কয়েকজনের স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।

দুর্ঘটনার খবর সংগ্রহে নেপালে যাওয়া সাংবাদিকরাও ছিলেন এই জানাজায়। রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে সামস জানান, ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে ৩ জনের মরদেহ এখনো শনাক্ত হয়নি, একজনের মরদেহ শনাক্তের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে তার লাশ শনাক্ত হলে লাশটি দেশে পাঠানো সম্ভব হতে পারে। আশা করছি বাকি দুজনের লাশও আমরা শনাক্ত করতে পারব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর