শুক্রবার, ২৩ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
নেপালে বিমান ট্র্যাজেডি

তদন্তে গতি নেই, নেপালেই প্রশ্ন

জুলকার নাইন

তদন্তে গতি নেই, নেপালেই প্রশ্ন

নেপালে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি কাজের গতি  নিয়ে অসন্তুষ্ট খোদ নেপালের ক্ষতিগ্রস্তরা। খোদ নেপালের গণমাধ্যমে কমিটি নিয়ে সমালোচনা উঠেছে এখন পর্যন্ত কোনো মিটিং না করায়। নেপাল এভিয়েশনের আগের তদন্তগুলোর ওপর অনাস্থার কথা ফের চলে এসেছে সামনে। নেপালের তদন্ত সক্ষমতা এবং রেগুলেটরি পক্ষগুলোর ওপর অনাস্থা জানিয়ে আগেই নেপালে সব ধরনের এভিয়েশন সার্ভিস বন্ধ রাখা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবারের তদন্তের ওপর দৃষ্টি রাখছে। নেপালের কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, নেপাল সরকারেরর গঠন করা কমিশন গতকাল পর্যন্ত কোনো বৈঠক বা ব্রিফিংয়ের আয়োজন করতে পারেনি। এ বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহও প্রকাশ্য নয়। অথচ গত বছর একই সময়ে জার্মান একটি সংস্থার বিমান বিধ্বস্ত হলে সাত দিনের মধ্যে ব্ল্যাকবক্সের ডিকোডিং শেষ হয়ে যায়। অথচ নেপালের কমিশন কানাডা, সিঙ্গাপুর নাকি ব্রিটেন কোথায় ব্ল্যাকবক্স পাঠাবে সেটাই ঠিক করে নাই ৮ দিনেও। নেপালের তদন্ত কমিশনের প্রধান সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে নেপালের গণমাধ্যমে। এর আগে নেপালের আরেকটি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত কমিটিতে তার ভূমিকার কথা ফের সামনে আনা হয়েছে। জানা যায়, সাবেক সচিব যজ্ঞ প্রসাদ গৌতমকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সিংহ দরবারের এক সভায় কমিশন গঠন করা হয়। তদন্ত কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— লেফটেন্যান্ট কর্নেল ড. রাজীব দেব, ক্যাপ্টেন কে কে শর্মা, সুনীল প্রধান এবং উদ্ধব প্রসাদ সুবেদি। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন যুগ্মসচিব বুদ্ধি সাগর লামিছানে। নেপালের জনসংখ্যা ও পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী লালবাবু পণ্ডিত জানান, মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে তদন্ত কমিশনকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমান দুর্ঘটনার  তদন্তের জন্য  ইউএস-বাংলার বিমান, পাইলট ও কো-পাইলট সংক্রান্ত সব তথ্য নেপালে পাঠানো হয়েছে।  তদন্ত কাজে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে নেপাল গেছেন  এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশ (এএআইজি-বিডি) প্রধান ক্যাপটেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ। তিনি নিয়ে গেছেন পাইলটের লগবুক, পাইলট লাইসেন্স, কো-পাইলটের ফ্লাইংয়ের অনুমতির বিষয়সহ বিমানের ক্রয়, মেরামত সংক্রান্ত অন্য সব তথ্য। সূত্র জানায়, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নেপালের সিভিল এভিয়েশনের তদন্ত দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এয়ারক্রাফট এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ইতিমধ্যে তাদের নামের তালিকাও নেপালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও ইউএস-বাংলার ড্যাস-৮-কিউ-৪০০ বিমানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কানাডার বোম্বারডিয়ারের দুই সদস্য গত মঙ্গলবার কাঠমান্ডু গেছেন। নেপালে রয়েছে বিমানটির ব্ল্যাকবক্স। ব্ল্যাকবক্সের তথ্য উদ্ধারে সময় প্রতিনিধি রাখার বিষয়ে আলোচনা চলছে। গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার বিমান। এ বিধ্বস্তের ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। ইউএস-বাংলার ওই বিমানে ৬৭ জন যাত্রী এবং চারজন ক্রু ছিলেন।

সর্বশেষ খবর