শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

আবিদের শোক সইতে পারলেন না আফসানা

নেপালে বিমান ট্র্যাজেডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আবিদের শোক সইতে পারলেন না আফসানা

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের শোক সইতে না পেরে চলে গেলেন তার স্ত্রী আফসানা খানম টপি। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। আসরের নামাজের পর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে পার্কের পাশে অবস্থিত মসজিদে আফসানার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে বনানীর সেনা কবরস্থানে স্বামীর পাশেই দাফন করা হয়। হাসপাতালের যুগ্মপরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম মণ্ডল এই প্রতিবেদককে জানান, আফসানা কার্ডিয়াকলি অ্যারেস্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

গত  রবিবার ভোরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর আফসানাকে প্রথমে উত্তরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে স্থানান্তর করেন স্বজনরা। ওই দিন দুই দফা অস্ত্রোপচার হয় তার। এর পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্র জানায়, লাইফ সাপোর্টে তাকে ভেন্টিলেটর মেশিনের সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস (হার্ট) চালু রাখার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। তবে এ ধরনের জটিল রোগীর কৃত্রিম উপায়ে যতটুকু অক্সিজেন টানার কথা (শতকরা ৯০ ভাগ) সেই কাঙ্ক্ষিত মাত্রার অক্সিজেন টানতে পারছিলেন না তিনি। অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ ভাগের কমে ওঠানামা করছিল। তার চোখের মণিও বড় হয়ে আসছিল। ফলে তার মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ না করায় শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচিয়ে রাখা আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ের বার্তা আগে থেকেই দিচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। তারা জানিয়েছিলেন, এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে ব্রেন অকেজো, কিডনি বিকল, প্রস্রাব বন্ধসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পড়ে। ‘মিরাকল’ না হলে বাঁচিয়ে রাখা বেশির ভাগ সময়ই সম্ভব হয় না, এটাই চরম সত্য ও বাস্তব। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার আফসানার কিডনি ফাংশন কমে যাওয়ার কথাও জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট।

চুপ হয়ে গেছে মাহি : ১০ দিনের মধ্যে বাবা ও মাকে হারাল তানজিব বিন সুলতান মাহি (১৪)। বাবা-মাকে হারিয়ে তাদের একমাত্র ছেলে মাহি ‘চুপ’ হয়ে গেছে। মাহির মামা খন্দকার রেজাউল করিম বলেন, ‘মাহি চুপ করে আছে। কাঁদলে মন হালকা হতো।’ তিনি জানান, আবিদের মৃত্যুসংবাদ পেয়েও তার স্ত্রী আফসানা কাদেননি। শক্ত হয়ে ছিলেন। মায়ের স্ট্রোকের সময় মাহি পাশে ছিল। এখন ছেলেকে নিয়েই তাদের যত চিন্তা।

সর্বশেষ খবর