শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

নিরাপত্তা চাদরে থাকবে ঢাকা

সর্বোচ্চ সতর্কতা দেশজুড়ে, থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক

পয়লা বৈশাখে আজ রাজধানীসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোতে থাকবে র‌্যাব-পুলিশের কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে স্থাপিত ওয়াচ টাওয়ারে বাইনোকুলার নিয়ে পর্যবেক্ষণে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আকাশে উড়বে র‌্যাবের হেলিকপ্টার। এ ছাড়া ডিবি, সোয়াতসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা থাকবে বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে। সিসিটিভি ক্যামেরায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার অনুষ্ঠানস্থল সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। গতকাল বিকালে রমনা বটমূল এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, পয়লা বৈশাখ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুত পুলিশ-র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যে কোনো ধরনের অঘটন এড়াতে তারা সতর্ক থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াত, হেলিকপ্টারসহ পুলিশের সব সংস্থা নিয়োজিত থাকবে। থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বর্ষবরণ উৎসবে কোনো ঝুঁকি নেই। দেশের মানুষের নির্বিঘ্ন বর্ষবরণ উদযাপনের প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, পবিত্র শবে মেরাজেও যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য বিকাল ৫টার পর উন্মুক্ত স্থানে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর যার যার বাসায় নিজের ইচ্ছে মতো বৈশাখ কিংবা শব-ই-মেরাজ পালন করতে পারবেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। সেখানে অনেক বিদেশিও অংশ নিতে পারেন। তাই শোভাযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা প্রয়োজন তার সবই করা হয়েছে। শুধু ঢাকা নয়, দেশব্যাপী বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পয়লা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠানস্থল রমনা বটমূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন। পরে পুলিশের বিশেষায়িত টিম সোয়াতের নিরাপত্তা মহড়া পর্যবেক্ষণ করেন। সোয়াত টিমের সদস্যরা কয়েক রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও একটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েকজন নাশকতাকারীকে পরাস্ত ও আক্রান্তদের উদ্ধারে একটি মহড়া প্রদর্শন করেন। সঙ্গে যুক্ত হয় সোয়াতের ডগ স্কোয়াড।

র?্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা সক্রিয় অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করবে। কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, সে জন্যই এ ধরনের নিরাপত্তা মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, সকালে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের নিরাপত্তা বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, বর্ষবরণ নির্বিঘ্ন করতে ও উৎসবের মূল কেন্দ্র রমনা পার্ক ও মঙ্গল শোভাযাত্রার ওপর হেলিকপ্টার থেকে দৃষ্টি রাখা হবে। পাশাপাশি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নারীদের যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হতে হয় সেজন্য রমনা পার্ক ও হাতিরঝিলে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পালন করবে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তিনি বলেন, উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য দেশব্যাপী নিরাপত্তা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে র‌্যাব। উৎসবের প্রাণকেন্দ্র রমনা। তবে এর পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে হাতিরঝিল, রবীন্দ্র সরোবর, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান হয়। বেশি জায়গায় অনুষ্ঠান হওয়ায় নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেলেও রমনায় জনসমাগমটা কম হয়। জনগণের উৎসব আনন্দমুখর করতে আমরা যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। থাকছে জঙ্গিগোষ্ঠীর ওপর নজরদারি। রমনার পাশাপাশি হাতরঝিলেও র‌্যাবের কন্ট্রোলরুম থাকবে। প্রথমবারের মতো শিশু ও বৃদ্ধদের বিশ্রামের জন্য রমনা ও হাতিরঝিলে বৈশাখী লাউঞ্জ করা হচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠানস্থল নজরদারিতে থাকবে। রমনা পার্কে জেডস্কি দিয়ে পেট্রল করা হবে। থাকবে র‌্যাবের চেকপোস্ট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় নজরদারি থাকবে। গতবারের মতো এবারও সর্বোচ্চ নিরাপত্তার স্বার্থে রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গ্যাসলাইট, দিয়াশলাই, চাকু, সিগারেট নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। মুখোশ, ভুভুজেলা ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর