সোমবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

কালো তালিকায় মিয়ানমার বাহিনী

নিরাপত্তা পরিষদে আজ উঠছে জাতিসংঘ মহাসচিবের রিপোর্ট

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী  জাতিসংঘের এই তালিকাভুক্ত হলো। ‘বিশ্বাসযোগ্য সন্দেহের’ কারণে যুদ্ধকালীন সময়ে ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সহিংসতার মতো অপরাধ ঘটানো সরকার বা বিদ্রোহীগ্রুপগুলোকে এ ধরনের তালিকায় রাখা হয়। নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেয়ার উদ্দেশ্যে মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের প্রস্তুত করা এক প্রতিবেদনে কালো তালিকাভুক্তির কথা জানা গেছে। প্রতিবেদনটির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস বা এপি। প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের সময়  সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করার কথা রয়েছে। এতে কালো তালিকাভুক্তির কথা বলা হয়েছে বিভিন্ন দেশের ৫১টি সরকার, বিদ্রোহী ও কট্টরপন্থি গ্রুপকে।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের জন্য প্রস্তুত করা প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মেডিকেল স্টাফ ও অন্যরা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম যে নৃশংস নির্যাতনের শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে তার প্রমাণ পেয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৬ সালের অক্টোবরে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে স্থানীয় কথিত উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন চালানোর সময় এই নৃশংসতা চালিয়েছে। রোহিঙ্গাদের তাদের দেশছাড়া হতে বাধ্য করতে এবং দেশে ফেরত যাওয়া বন্ধ করতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ব্যাপক হুমকি ও যৌন সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। তারা সমন্বিতভাবে এ সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে। রোহিঙ্গাদের উগ্র করে তুলেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, নৃশংসতা থেকে বাদ যায়নি কেউই। নারী, শিশু এমন কি সন্তানসম্ভবা নারীদের ওপরও চালানো হয়েছে যৌন সহিংসতা, তাদের কেউ কেউ কারাগারেও বন্দী। গত আগস্টে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর আউটপোস্টে হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা)। প্রায় ৩০টি পোস্টে এমন হামলায় নিহত হন কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী। এর ফলে ২৫ আগস্ট শুরু হয় সেখানে নৃশংসতা। নির্মম এক নির্যাতন অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ অমনক দেশ ও সংস্থা একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

কালো তালিকায় আরও যারা : জাতিসংঘের প্রতিবেদনে যে ৫১টি সরকার, বিদ্রোহী ও কট্টরপন্থি গ্রুপকে কালো তালিকাভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে এর মধ্যে কঙ্গোর সশস্ত্রবাহিনী ও পুলিশসহ ১৭টি গ্রুপ, সিরিয়ার সশস্ত্রবাহিনী ও গোয়েন্দাসহ ৭টি গ্রুপ, সেন্ট্রাল আফ্রিকা ও সাউথ সুদান থেকে ৬টি গ্রুপ, মালি থেকে ৫, সোমালিয়া থেকে ৪, সুদান থেকে ৩, ইরাক ও মিয়ানমারের ১টি করে এবং বিভিন্ন দেশে জঙ্গি তৎপরতা চালানো বোকো হারাম রয়েছে।

সর্বশেষ খবর