বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

হলো না ইমিগ্রেশন পুলিশের আলাদা ইউনিট

মির্জা মেহেদী তমাল

দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিভাগ নৌ, বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে গড়ে ওঠেনি পুলিশের আলাদা কোনো ইউনিট। বিদেশ হতে বাংলাদেশে আগত এবং বিদেশের উদ্দেশে গমনরত বাংলাদেশি ও বিদেশি যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিসেবা প্রদানে পুলিশের আলাদা কোনো ইউনিট না থাকায় অনিয়ম বাড়ছে দিনে দিনে। যাত্রীরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন ইমিগ্রেশনে। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তারা পুলিশ বিভাগের বিশেষ শাখা (এসবি)’র তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরগুলোতে পুলিশের আলাদা ইউনিট গঠন করা দীর্ঘদিনের দাবি। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপর্ণ এই সেক্টরটি অবহেলিত। বিভিন্ন দেশে এই শাখায় পুলিশের আলাদা ইউনিট থাকলেও বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো কাজ শুরু হয়নি। বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ (এএপি) কাজ করলেও এই ইউনিটও আলাদা আরেক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাজ করছে।

জানা গেছে, ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন বিভাগ ঢাকা এসবি শাখার তত্ত্বাবধানে চলে। অন্য জেলার বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে সংশ্লিষ্ট মহানগর পুলিশের দায়িত্ব ছিল। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে আদম পাচারসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুর্নীতির ঘটনাগুলো ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের দায়িত্ব নেয় ঢাকার এসবি। বর্তমানে সেভাবেই চলছে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর। এ অবস্থা অন্য বিমানবন্দরগুলোতেও।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও মনিটর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, দেশের বিভিন্ন সেক্টরে পুলিশের আলাদা ইউনিট রয়েছে। শিল্পাঞ্চল পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ এমনকি ট্যুরিস্ট পুলিশও রয়েছে। অথচ সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিমানবন্দরগুলোর জন্যে আলাদা কোনো ইউনিট গঠন করা হয়নি পুলিশে। বাংলাদেশে বিমানবন্দরের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে আগত ও বিদেশের উদ্দেশে গমনরত যাত্রীদের পরিসেবা যথাযথভাবে দেওয়ার জন্য ইমিগ্রেশনে আলাদা ইউনিট গঠন জরুরি। তিনি বলেন, পুলিশের মধ্য থেকে ইমিগ্রেশনে যাদের পাঠানো হয়, তাদের আবার দুই মাস পরই ফেরত নেওয়া হয়। তারা কাজ শেখার আগেই ইমিগ্রেশন থেকে চলে যাচ্ছেন। যে কারণে অভিজ্ঞ লোকের অভাব হচ্ছে ইমিগ্রেশনে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বদলি হবে-এটা তাদেরও জানা থাকে। এমন জানা থাকলে দুর্নীতির মনোভাবও তৈরি হতে পারে তাদের মধ্যে।

তবে ইমিগ্রেশন পুলিশ নামে আলাদা ইউনিট গঠনের চিন্তা আপাতত নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-১) হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত ইমিগ্রেশনে পুলিশের আলাদা ইউনিট গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়নি। তাদের পারফরমেন্স ভালো। যাদের সেখানে পাঠানো হয় তারা প্রশিক্ষণ ও মেধায় যেগ্যতাসম্পন্ন। অন্যান্য ইউনিট গঠন করা হয়েছে প্রয়োজনীয়তার তাগিদে। জেলা পুলিশ সেসব স্থানে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছিল না। যে কারণে নৌপুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ বা শিল্পাঞ্চল পুলিশ নামে আলাদা ইউনিট গঠন করা হয়।

সর্বশেষ খবর