শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
সম্মেলন উদ্বোধনে রানী এলিজাবেথ

কমনওয়েলথ বিশ্বের অন্যতম মিলিত শক্তি

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, যুক্তরাজ্য থেকে

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ২৫তম কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন (সিএইচওজিএম)। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা) বাকিংহাম প্যালেসে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সম্মেলনে কমনওয়েলথের ৫৩টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত রয়েছেন।

বাকিংহাম প্যালেসের বলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ?উপস্থিত নেতাদের স্বাগত জানিয়ে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ বলেন, ‘আনন্দঘন সময়ে দ্বিবার্ষিক এ সভায় আমার বাড়িতে আপনাদের স্বাগত।’ রানী বলেন, ‘আমার আন্তরিক ইচ্ছা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থিতিশীলতা এবং এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে কমনওয়েলথ। একদিন প্রিন্স ওয়েলস এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ এগিয়ে নেবে, যেটি আমার বাবা ১৯৪৯ সালে শুরু করেছিলেন। কমনওয়েলথকে বিশ্বের অন্যতম মিলিত শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে তাদের যৌথ সামুদ্রিক সম্পদ ও বাণিজ্য রক্ষা করতে হবে। সম্মেলনের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রিন্স চার্লস ওয়েলস। এরপর বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। কমনওয়েলথের বিদায়ী চেয়ারম্যান মালটার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাসকাট বক্তব্য রাখার পর সম্মেলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্টকল্যান্ড। জাঁকজমক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত, নৃত্যসহ সাংস্কৃতিক আয়োজন ছিল। সকাল ১০টায় রাজপরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল বাকিংহাম প্যালেসে প্রবেশ করেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। অনুষ্ঠান শুরুর আগে থেকেই ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহাম প্যালেসে আসেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। সম্মেলন ঘিরে বাকিংহাম প্যালেসের সামনে ও গ্রিন পার্ক সাজানো হয় রাজকীয় সাজে। বাকিংহাম প্যালেসের সামনেও ব্রিটিশ ঐতিহ্যকে ধারণ করে কামান, ঘোড়াসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, শ্রীলঙ্কাসহ কমনওয়েলথভুক্ত ৫৩ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশ নিয়েছেন। শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে ‘কমনওয়েলথস রোল ইন প্রমোটিং ট্রেড, ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইনোভেশন’ শীর্ষক এক বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আন্তকমনওয়েলথ ব্যবসা, বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনার উন্নয়নের জন্য সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাণিজ্য প্রশাসনকে আরও উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ করে তুলতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই বাণিজ্য প্রশাসন উন্মুক্ত, আইনভিত্তিক, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করব।’ তিনি বলেন, আন্তকমনওয়েলথ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনার লক্ষ্যে দেশগুলোকে অবশ্যই অভিন্ন সুযোগ-সুবিধা জোরদার করতে হবে। এবার কমনওয়েলথ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সাধারণ ভবিষ্যতের দিকে’ (টুয়ার্ডস কমন ফিউচার)। এতে বিশেষ মনোযোগ থাকবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর জন্য উন্নতি, নিরাপত্তা, ন্যায্যতা ও স্থায়িত্ব অর্জনে।

লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর ১৩ গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে স্বাক্ষর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি ২৫তম কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের বৈঠকে যোগ দিতে এখন লন্ডনে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এখানে সাংবাদিকদের বলেন, লন্ডনে ব্যস্ত কর্মসূচি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল ব্যবস্থায় অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ফাইলে স্বাক্ষর ও নিষ্পত্তি করছেন।

সর্বশেষ খবর