শিরোনাম
রবিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়

৭২-এর সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না এমন বিধান যুক্ত করতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের আগে রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ ছাড়ার দাবিসহ সাত দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন। এসব দাবি বাস্তবায়নে দলমত নির্বিশেষে তিনি জনগণের জাতীয় ঐক্যের ডাক  দেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব পেশ করেন তিনি। এর আগে একই স্থানে অনুষ্ঠিত গণফোরামের বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এসব প্রস্তাবনা গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. কামাল হোসেন। প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আনতে হবে এবং নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত করে সব রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য বর্তমান সংবিধানের সময়োপযোগী সংশোধনের জন্য একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, এক ব্যক্তির দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারার বিধান উপমহাদেশের বহু দেশেই রয়েছে। আগামীতে সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে যারা সরকার গঠন করবে তারা যেন সংবিধানে এসব বিধান যুক্ত করেন সে লক্ষ্যেই প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে গণফোরাম সভাপতি বলেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করা উচিত হবে না। কারণ সংসদ বহাল রাখাটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে কিনা তা সবাই জানে। তিনি বলেন, ৪৬ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সংসদ বহাল রাখা উচিত নয়। তাছাড়া পরিস্থিতির আলোকে নির্বাচনে প্রয়োজনে সেনা মোতায়েন করতে পারার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকা উচিত। যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না তারাই বলবে— সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, কে ভোটে এলো কে এলো না তাতে কিছু যায় আসে না, সংসদ বহাল রেখেই নির্বাচন হবে, ইত্যাদি। কিন্তু দেশের মানুষ অনেক সচেতন। জনগণ সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। নির্বাচন হতে হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। বলা হচ্ছে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন। আলহামদুলিল্লাহ! সংবিধানের মূল কথাই হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন।

দেশের প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনেকেই সরকারের সদিচ্ছা দেখছে না। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি তৎকালীন বিএনপি সরকার একটি একতরফা নির্বাচন করতে চেয়েছিল। সেদিন সেটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী। আমরা সবাই ওনার শুভাকাঙ্ক্ষী। ওনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি— ওনার সে সময়ের বক্তব্যগুলো আজ আবার মিডিয়ায় ছাপানো দরকার। এ সময় ড. কামাল দুঃখ করে বলেন, ‘ক্ষমতার স্বাদ এমন এক স্বাদ যা পেলে কেউ আর ছাড়তে চায় না। কিন্তু ক্ষমতার স্বাদ যতই হোক সেটিকে আঁকড়ে রাখা উচিত নয়। যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা কায়দা করে এমন নির্বাচন করতে চান যেন ক্ষমতাটা তাদের হাতেই থেকে যায়, এমন নির্বাচন আমরা স্বৈরাচারের আমলেও দেখেছি। আপনি বিএনপির সঙ্গে জোটে যাবেন কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে গণফোরাম সভাপতি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা জোট নিয়ে চিন্তা শুরু করছি না। জনগণকে নিয়ে শুরু করতে চাই। কারও সঙ্গে জোটে যাব কি যাব না তা নির্বাচন এলে দেখা যাবে। জনগণের জোটের লক্ষ্য একটাই— দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য দরকার সুস্থ রাজনীতি।

সর্বশেষ খবর