শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
গাজীপুর-খুলনা সিটি নির্বাচন

জেলা মাঠপর্যায়ের সমন্বয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

জেলা মাঠপর্যায়ের সমন্বয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ নির্বাচনকে ‘মর্যাদার লড়াই’ হিসেবে দেখছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। তাই জয়ের জন্য মরিয়া কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগরের নেতারা।

গতবারের এ দুই সিটি ভোটের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছেন ক্ষমতাসীনরা। গত নির্বাচনের ভোটে যে সমন্বয়হীনতা ছিল, সেগুলো এবার কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পর্যায় সমন্বয়ে কাজ করছেন। দলীয় সূত্রমতে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি ভোটকে গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে দুটি সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবেও কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করেছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে ১৪ দল। গাজীপুরে জাতীয় পার্টিও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। খুলনার সিটি ভোটে কেন্দ্রীয়ভাবে গঠিত টিমে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও গাজীপুরে জাহাঙ্গীর কবির নানক। ১৫ মে এ দুই সিটিতে ভোট। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয়, মহানগর এবং জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলেছেন। ভোট-দোয়া প্রার্থনার পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন উন্নয়নের। কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ও মহানগর নেতাদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করছেন। নির্দেশ দিচ্ছেন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার। এ প্রসঙ্গে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান সমন্বয়ক ও দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। একই সঙ্গে আমাদের দলীয় প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেককে বিজয়ী করতে জেলা-মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারাও মাঠে কাজ করছেন।’ গাজীপুরের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত সিটি নির্বাচনে অপপ্রচারের কারণে আমরা বিজয়ী হতে পারিনি। বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়ে গাজীপুরের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। গাজীপুরের মানুষ এখন উপলব্ধি করেন উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। সে কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকেই নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।’ সূত্রমতে, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি সহনশীল পর্যায়ে রাখা, যাতায়াতব্যবস্থার উন্নয়ন, বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি এবং আধুনিক ও পরিকল্পিত তিলোত্তমা নগরী গড়ে তোলার অঙ্গীকারসহ ৩১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন খুলনায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলমও ইশহেতার ঘোষণা করবেন যে কোনো দিন। গাজীপুরে দলীয় প্রার্থীর প্রধান এজেন্ট করা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাকে। সেখানে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে কয়েক দিন ধরে মাঠে ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীমকুমার উকিল। তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে এবং জেলা ও মহানগর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। আগামীকাল থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা টিম নিয়ে মাঠে যাবেন। খুলনা সিটিতে স্থানীয়ভাবে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে আহ্বায়ক কাজী আমিনুল ইসলাম, প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শেখ হারুনুর রশিদ, প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন। এস এম কামাল দীর্ঘদিন ধরে খুলনায় অবস্থান করছেন। গতকালও দৌলতপুর, খালিশপুরে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির (জেপি) সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন বলে তিনি জানান। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ দুই সিটি নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। কারণ, এই নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতেই মাঠের জনপ্রিয়তার প্রমাণ মিলবে। ফল পক্ষে এলে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সুফল পাবে আওয়ামী লীগ। সে কারণেই এবার ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে মাঠে নামছেন তারা।

সর্বশেষ খবর