বুধবার, ১৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিক্ষিপ্ত ঘটনা শান্তিপূর্ণ ভোট

নারী ও নতুনদের উপস্থিতি ♦ তিন কেন্দ্র স্থগিত ♦ সাত কেন্দ্রে গোলযোগের খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা থেকে

বিক্ষিপ্ত ঘটনা শান্তিপূর্ণ ভোট

প্রধান দুই দলের মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ভোটের আগে উত্তেজনা ছড়ালেও বড় ধরনের কোনো গোলমাল ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। বেশকিছু কেন্দ্রে জাল ভোট, গোলযোগ, এজেন্টদের বাধা দেওয়া ও নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোথাও বড় ধরনের কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলে। এরপর কেন্দ্রে কেন্দ্রে শুরু হয় গণনা। ভোট গ্রহণের শুরু থেকেই কেন্দ্রগুলোয় ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নারী ও নতুন ভোটারের উপস্থিতি ছিল ভালো। নগরীর ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটির ভোট অনিয়মের কারণে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুচ আলী। এ ছাড়া আরও সাত কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত কিছু গোলযোগের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা দুই কেন্দ্রে ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, অর্ধেক ভোট কেন্দ্রেই নানা ধরনের অনিয়ম ঘটেছে। কেন্দ্রে ঢুকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর মার্কা নৌকায় সিল মেরে ব্যালট দিয়ে বাক্স ভরা হয়েছে। ধানের শীষের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি মারধরও করা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেছেন, পরাজয় অবশ্যম্ভাবী জেনে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি মিথ্যা অভিযোগ করছে।

তিন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত : জাল ভোটের অভিযোগে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইকবালনগর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২ নম্বর কেন্দ্র, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের লবণচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (নিচতলা) ২৭৭ নম্বর কেন্দ্র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের ২৭৮ নম্বর কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ২ হাজার ১২৪ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৭০৭ জন ভোটার রয়েছেন। নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসারের সহায়ক কর্মকর্তা এস এম হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, বেলা ১১টর পর থেকেই বহিরাগতরা কেন্দ্রগুলোর দখল নেয়। তারা ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ঢোকাতে থাকে। খবর পেয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা ও র‌্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে এ তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।

রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুচ আলী জানান, ওইসব কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার পরামর্শে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ফাতিমা উচ্চবিদ্যালয়ের ১৮১ নম্বর কেন্দ্র সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। পরে এই কেন্দ্রের ৮৫টি জাল ভোট বাতিল করে প্রায় আধা ঘণ্টা পর পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়।

সিল মারা ব্যালট পড়ে আছে টেবিলে : বেলা ১২টার দিকে লবণচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢুকে একদল যুবক জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মেরে সেগুলো বাক্সে ভরা শুরু করে। প্রিসাইডিং অফিসার সাময়িকভাবে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছালে তারা পালিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারা, মুড়িবই ত্যাড়াবাঁকাভাবে ছেঁড়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চলে আসায় সিল মারা অনেক ব্যালট বাক্সে ভরতে পারেনি। সেগুলো মুড়িবইয়ের সঙ্গে টেবিলের ওপরই ছিল। এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রোকনুজ্জামান বলেন, কিছু যুবক এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, আমি ওপরে (দোতলায়) ছিলাম, জানতে পারিনি। সিল মারা ব্যালট পেপারের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এসব ব্যালট পেপার বাতিল করা হবে। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ১৬। বেলা ১২টা পর্যন্ত ১ হাজারের মতো ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার। তবে ভোট কেন্দ্রের বাইরে থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কিছু কর্মী সাংবাদিকদের বলেন, এ কেন্দ্রে কোনো ঝামেলা হয়নি, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে।

লাইনে ভোটার, নেই ব্যালট পেপার : রূপসা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র। ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে অনেক ভোটার। বেলা ১২টার দিকে তাদের জানানো হয় ব্যালট পেপার শেষ, অপেক্ষা করতে হবে, ব্যালট পেপার এলে আবার ভোট নেওয়া শুরু হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন জানান, বেলা ১১টার দিকে একদল যুবক ওই কেন্দ্রে ঢুকে সব ব্যালট কেড়ে নিয়ে সিল মেরে বাক্সে ভরেছে। এরপর যারা ভোট দিতে গেছেন, তারা ব্যালট পাননি। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ইবনুর রহমান বলেন, কিছু যুবক এসে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে ভোট গ্রহণ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে আবারও ভোট গ্রহণ শুরু হবে। তবে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হতে দেখা যায়নি।

মঞ্জুর অভিযোগের সত্যতা মেলেনি : খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে সকালে দাবি করেন দলটির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তবে ওই কেন্দ্রে সরেজমিন ঘুরে ও বিএনপির এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। ওয়ার্ডটির লায়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানের পাঁচটি বুথের মধ্যে চারটিতেই বিএনপির এজেন্ট রয়েছেন। এ সময় বিএনপির দুই এজেন্ট সিরাজুল ইসলাম ও ওমর ফারুক বলেন, ভোট গ্রহণের শুরু থেকেই আমরা অবস্থান করছি। কোনো ধরনের হুমকি কিংবা এখন পর্যন্ত কোনো চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। এই কেন্দ্রের দায়িত্বরত ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা সঞ্জীব কর্মকার বলেন, একটি বুথের এজেন্ট আসেননি। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে যারা এসেছেন তাদের ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই। পাশের আরেকটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ছয়টি বুথের মধ্যে পাঁচটিতে বিএনপির এজেন্ট রয়েছেন। এই কেন্দ্রের দায়িত্বরত ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা এম এম ইসমাইল হোসেন জানান, একটি বুথে বিএনপির কোনো এজেন্ট আসেননি। বাকিগুলোয় তাদের যে এজেন্ট রয়েছেন সেখানে কোনো ধরনের ঝামেলা নেই। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।

জাল ভোট, ৮৫ ব্যালট বাতিল : নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের জাল ভোট দেওয়ার ঘটনায় ২২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ৮৫টি ব্যালট পেপার বাতিল করা হয়েছে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে ফাতিমা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হট্টগোল বাধলে কেন্দ্রের দুটি বুথের ভোট গ্রহণ ১৫ মিনিট বন্ধ রাখা হয়। পরে আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দুই বুথের ৮৫টি ব্যালট পেপার বাতিল করা হয়েছে। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৯০৬ জন। কেন্দ্রটি আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের বাড়ির সামনে অবস্থিত। এখানে বিএনপির কোনো পোলিং এজেন্ট দেখা যায়নি। বেলা ১টার দিকে একটি বুথে কয়েকজন যুবককে প্রকাশ্যে সিল মেরে বাক্সে ব্যালট পেপার ঢোকাতে দেখা যায়। তবে কোনো তাড়াহুড়া ও হট্টগোল ছিল না। কিন্তু কোনো ভোটারকে ব্যালট পেপার নিয়ে গোপন কক্ষে যেতে দেখা যায়নি। বাক্সের সামনেই সিল মেরে ঢোকান। জানতে চাইলে এক কর্মী বলেন, কনফিডেন্ট আছে, তাই প্রকাশ্যেই সিল মারছে।

ভোটার ও বিএনপির এজেন্টশূন্য জিলা স্কুল কেন্দ্র : ২২ নম্বর ওয়ার্ডে খুলনা জিলা স্কুল কেন্দ্রে দুপুরে ভোটার এবং বিএনপির কোনো এজেন্ট পাওয়া যায়নি। বেলা পৌনে ১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রে আটটি বুথের কোনোটির সামনেই ভোটার নেই। কিছুক্ষণ পরপর দু-এক জন ভোটারকে আসতে দেখা যায়।

নাসিমা আক্তার নামে এক ভোটার অভিযোগ করেন, তার ভোটটি নাকি আগেই দেওয়া হয়ে গেছে। এ সময় নৌকার ব্যাজ পরা কয়েকজন যুবককে দুটি বুথের মধ্যে অবস্থান করতে দেখা যায়। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে তারা বেরিয়ে যান। বাকি বুথে কোনো ভোটার দেখা যায়নি।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, আটটি বুথের মধ্যে ৬ নম্বর বুথে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বিএনপির একজন এজেন্ট দিলেও ১০টা ৫০-এর দিকে তিনি চলে যান। বেলা পৌনে ১টার দিকে ৩০ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান তিনি। ভোটার উপস্থিতি কম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটাররা না এলে কী করার আছে। এই কেন্দ্রের বাইরে নৌকা সমর্থকদের উপস্থিতি দেখা যায়। খুলনা জিলা স্কুল অর্থাৎ ১৭৯ নম্বর কেন্দ্রের অন্য প্রান্তে রয়েছে ১৮০ নম্বর কেন্দ্র। সেখানেও একই চিত্র দেখা যায়। বাইরে নৌকা সমর্থকদের উপস্থিতি থাকলেও ভোট কেন্দ্র ছিল ফাঁকা।

নতুন ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত ভোটাররা : কেসিসি নির্বাচনে দুই কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত ভোটাররা। ডিজিটাল সিস্টেমে ভোট গ্রহণ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তারাও। দুটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। নির্বাচন কমিশন নতুন ইভিএমে ভোট নিয়েছে সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিটিআইর জসিম উদ্দিন হোস্টেল কেন্দ্রে। এর মধ্যে সোনাপোতা কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৯৯, আর জসিম উদ্দিন হোস্টেল কেন্দ্রে ১ হাজার ৮৭৯।

সকালে সোনাপোতা কেন্দ্র থেকে ইভিএমে ভোট দিয়ে এসে ৫০ বছর বয়সী পাপড়ি বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগে কাগজে ভোট দিতাম। অনেক সময় ভোট নষ্ট হয়ে যেত। আর এখন খুব সহজেই ভোট দিলাম। আঙ্গুলের ছাপ দিলাম, পছন্দের প্রার্থীর পাশের বোতাম টিপলাম, ভোট হয়ে গেল। এত সহজে ভোট দিতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে।

এ কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট দিয়েছেন নতুন ভোটার বিশরি সাহা। তিনি বলেন, মুরব্বিদের কাছ থেকে শুনেছি কাগজের ব্যালট পেপারে ভোটের কথা। তারা আমাকে ভোট কীভাবে দিতে হবে তা শিখিয়েছেন। তবে এই ডিজিটাল যুগে, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দিতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিষয়ে পিটিআইর জসিম উদ্দিন হোস্টেল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো. মামুন সরদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগে অনেক ঝামেলা ছিল। ব্যালট পেপার শেষ হলে, মুড়িবই এনে সংরক্ষণ করতে হতো। এখানে সেই ঝামেলা নেই। ইভিএমের মাধ্যমে খুব দ্রুত ভোট গ্রহণ করা যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।

নারী ভোটারের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো : সকাল সাড়ে ৭টা। ভোট গ্রহণ শুরু হতে বাকি আধ ঘণ্টা। পাইওয়নিয়ার বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গেটে নারী ভোটারের ভিড়। পৌনে ৮টায় গেট খুলতেই সবাই বিদ্যালয়ের মাঠে যার যার কেন্দ্রের সামনে দাঁড়ালেন। এই বিদ্যালয়ের নারী কেন্দ্রের সামনে এ সময় অন্তত ৫০ জন নারী ভোটারকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় দেখা যায়। শুধু পাইওয়নিয়ার বিদ্যালয় কেন্দ্রই নয়। নগরীর অধিকাংশ কেন্দ্রেই ছিল নারী ভোটারের ভিড়। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার জোছনা বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সকাল সকাল চলে এসেছি। পরে অনেক বেশি ভিড় হয়। ভোট দিয়ে বাসায় গিয়ে রান্নাবান্না করতে হবে।

নতুন ভোটারদের উচ্ছ্বাস : এবার সিটি নির্বাচনে প্রায় ৫৩ হাজার নতুন ভোটার যোগ হয়েছেন, যারা বয়সে তরুণ। পিটিআই একাডেমিক ভবন কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন এ রকম তিন তরুণী। জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে এসে খুবই উচ্ছ্বসিত দেখাচ্ছিল তাদের। পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার মিনা খাতুন বললেন, ‘জীবনের প্রথম ভোট দিতে এসেছি, খুবই আনন্দ লাগছে।’ একই এলাকার রিমা খাতুন বলেন, ‘আমিও প্রথম ভোট দিতে এসেছি, ভোট না দেওয়া পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছি না।’ মিস্ত্রিপাড়ার জ্যোতি আহমেদ বলেন, ‘জীবনে প্রথম ভোট দিতে এসেছি, মনে অনেক রকম শঙ্কা ছিল। তবে ভোট কেন্দ্রে এসে খুবই ভালো লাগছে। পরিবেশ খুব সুন্দর।’

দৃষ্টি কেড়েছেন দুলাল : খুলনা মহানগরীর রূপসা এলাকার যুবক মো. দুলাল। শিপইয়ার্ড এলাকার হাজী আবদুল মালেক ইসলামিয়া কলেজ কেন্দ্রের বাইরে সারা দিন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সারা গায়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ও নৌকা প্রতীকের ছবি এঁকে ভোট কেন্দ্রের সামনের রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছেন। তাকে সবসময় ঘিরে রাখছিল স্থানীয় আরও কিছু যুবক।

সর্বশেষ খবর