নেতা-কর্মীদের ঐক্য, সরকারের উন্নয়ন এবং সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ায় খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয় এসেছে বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির ‘দুর্গ’ খ্যাত খুলনায় নৌকার জয়ে উজ্জীবিত দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সিটির জয়ের ধারাবাহিকতায় আগামী ২৬ জুন গাজীপুরেও জিততে চায় দলটি। বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনেওজনপ্রিয় প্রার্থী মনোনয়নের পাশাপাশি দলীয় ঐক্য সমুন্নত রাখতে চেষ্টা চালাবে ক্ষমতাসীনরা। দলীয় সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে খুলনার নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ জন্য দলীয় প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে প্রচার-প্রচারণার কৌশল নির্ধারণসহ সব কিছু খুব সতর্কতার সঙ্গে করেন দলের নীতিনির্ধারকরা। যে কারণে বিএনপির দুর্গতেও জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। বিজয়ের পরে এখন অনেকটাই নির্ভার তারা। মূল চ্যালেঞ্জ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ঘাটতির জায়গা চিহ্নিত করে ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর জোর দিচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারের উন্নয়ন-অর্জনের কারণে জয় এসেছে। সমুদ্র ও সীমান্ত বিজয় হয়েছে। পারমাণবিক ক্লাবে যোগ দেওয়া এবং স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উেক্ষপণে ঐতিহাসিক সাফল্যের কারণে মানুষ নৌকার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির জন্য সামনে আরও বড় বড় হার অপেক্ষা করছে। খুলনা থেকে তাদের শিক্ষা নিতে হবে। দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, রংপুর সিটিতে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজয়ের কারণে মাঠের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন দলের হাইকমান্ড। সে কারণে খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দলের সাংগঠনিক অবস্থা ও জনপ্রিয়তা পরীক্ষার টেস্ট কেস হিসেবে নেওয়া হয়। খুলনা সিটিতে বরাবর বিএনপির আধিপত্য থাকলেও এবারের নির্বাচনে সরকারের উন্নয়ন, ব্যক্তি তালুকদার আবদুল খালেকের জনপ্রিয়তার ওপর আস্থা রেখেছেন স্থানীয় ভোটাররা। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে শুরু থেকেই মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন। নির্বাচনে জয়ের কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনার মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ওপর আস্থা রেখেছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই অঞ্চলের মানুষ ভালো থাকে, শান্তিতে থাকে, তাদের উন্নয়ন হয়। সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হলে যে বড় ব্যবধানে বিজয় আসে তারও প্রমাণ মিলেছে খুলনায়। জাতীয় নির্বাচনের আগে খুলনা সিটি করপোরেশনে নৌকার পক্ষে যে সুবাতাস উঠেছে তা জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীর ঐক্য, সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন এবং সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার কারণেই আমাদের বিজয় এসেছে। এই বিজয় আমরা ধরে রাখতে চাই। ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হবে। এ ছাড়াও সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনগুলোতেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হবেন।