শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের জনগণের মনোভাবের সত্যিকার প্রতিফলন হওয়া সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দেয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফর করা মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি’র প্রশাসক মার্ক গ্রিন। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের বন্ধু। খোলামেলা ও সততার সঙ্গে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার ওপরই এ বন্ধুত্ব নির্ভরশীল। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বলে, টেকসই ও সার্থক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অপরিহার্য হলো সক্রিয় গণতন্ত্র।

গতকাল ঢাকার আমেরিকান ক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে বলেও জানান মার্ক গ্রিন। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের উদ্দেশ্যে গত ১৩ মে ঢাকা পৌঁছানো মার্ক গ্রিন এরই মধ্যে সরেজমিনে রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখে এসেছেন। ক্যাম্প এলাকায় গিয়ে তিনি মার্কিন প্রশাসনের আরও ৪৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। গত বুধবার বিকালে তিনি পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পাশাপাশি বাংলাদেশে ইউএসএআইডির সাবেক কর্মী জুলহাস মান্নান হত্যার বিচারের অগ্রগতির বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মার্ক গ্রিন। গতকাল ঢাকা সফরের শেষ দিনে গোলটেবিলে অংশ নিয়ে তিনি বাংলাদেশে বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান আটক অভিযান বিচারবহির্ভূতভাবে হয়রানি এবং সাংবাদিকদের গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মার্ক গ্রিন বলেন, এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের সত্যিকারের সব বন্ধুরাই উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সবসময়ই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের আগে, চলাকালীন সময়ে এবং পরের সময়গুলোতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ইউএসএআইডির প্রশাসক বলেন, এ সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তার অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নতুন আসা কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে তাদের সঙ্গে ভয়াবহ ঘটনা ঘটার কথা শুনেছি। তারা সহিংসতার শিকার হয়েছে এবং তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন, রাখাইনসহ অন্যান্য অঞ্চলে সহিংসতা বন্ধ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অবিলম্বে শুরু করাসহ অন্যান্য বিষয়াদি মিয়ানমার সরকারকে করতে হবে। মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি— সেখানকার সমাজের বৈষম্য সমস্যা সমাধানের জন্য। কারণ এটিই সব সমস্যার মূল কারণ। আমি মিয়ানমারে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে তাদের বলব— তারা যেন তাদের কাজটি করে।’ আসন্ন বর্ষা মৌসুমে এ সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। পরে গতকাল দুপুরের পরপরই মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন ইউএসএআইডির প্রশাসক। বাংলাদেশে সফরে তার সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডির এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপ-প্রশাসক গ্লোরিয়া স্টিলি ও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক উপসহকারী মন্ত্রী মার্ক স্টোরিলা।

সর্বশেষ খবর