রবিবার, ২০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

খালেদার আপিল শুনানি কবে

আহমেদ আল আমীন

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালাস চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে আপিল করেছেন, তার শুনানি হবে হাই কোর্টে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, এ মামলার পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষ শুনানির জন্য প্রস্তুত। তবে হাই কোর্টে সেই শুনানি কবে শুরু হবে? যদিও আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এ মামলার আপিল নিষ্পত্তির জন্য আপিল বিভাগের নির্দেশনা আছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। বেগম জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন ১৬ মে বহাল রাখে আপিল বিভাগ। তবে আরও একাধিক মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট থাকায় এখনই কারামুক্তি হচ্ছে না তাঁর।   জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ৩৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাতেই তাঁর সাজা হয়েছে। ফলে সাজা বহাল থাকা না থাকার ওপরে আগামী নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ করতে পারার বিষয়টিও নির্ভর করছে। আইনজীবীরা জানান, খালেদা জিয়ার জামিন সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশ সরাসরি সংশ্লিষ্ট কোর্টে যেতে পারে। সেখানে বিষয়টি মেনশন করলে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে হাই কোর্ট শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দেবে। পরে সেই তারিখে হাই কোর্টে শুনানি শুরু হবে। এ ছাড়া আপিল বিভাগের আদেশের সার্টিফাইড কপি নিয়ে কোনো পক্ষ হাই কোর্টে মেনশন আকারে তুলতে পারে। সে ক্ষেত্রেও হাই কোর্ট শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দিতে পারে। তাই হাই কোর্টে এ মামলার আপিল শুনানি কবে শুরু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর এর প্রক্রিয়া স্পষ্ট হবে। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগের রায়ের সার্টিফাইড কপির জন্য আমরা আবেদন করেছি। রায়ের সার্টিফাইড কপি যেদিন হাতে পাব, তার পরদিনই আমরা হাই কোর্টে শুনানির জন্য মেনশন করব। এরপরই বিষয়টি শুনানির দিকে যাবে। খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেন, আপিল বিভাগের রায় আগে প্রকাশিত হোক। আপিল বিভাগের রায় হাতে পাওয়ার পরে, তা যাচাই-বাছাই করে শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়। পাঁচ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। এ মামলায় অন্য পাঁচ আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্যদের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া আসামিদের আর্থিক জরিমানাও করেছে বিচারিক আদালত। অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাই কোর্টে আপিল করেন। নথিপত্রসহ ১২২৩ পৃষ্ঠার ওই আপিল আবেদনে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার খালাস চাওয়া হয়েছে। শুনানির পর ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের হাই কোর্ট বেঞ্চ। সেই সঙ্গে তার আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে পেপারবুক তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরদিন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ। ১৪ মার্চ শুনানি করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলে আপিল বিভাগ। ১৯ মার্চ দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ৮ মে পর্যন্ত জামিন স্থগিত করা হয়। তিন দিনের দীর্ঘ শুনানি শেষে জামিন বহাল রেখে রায় দেয় আপিল বিভাগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর