মঙ্গলবার, ২২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঈদের পর তফসিল তিন সিটিতে

জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ভোট রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে

গোলাম রাব্বানী

ঈদের পর তফসিল তিন সিটিতে

এবার রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঈদুল ফিতরের পরপরই এই তিন সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়ে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ২৫ থেকে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে তিন সিটিতে ভোট করার চিন্তা আছে। এজন্য ১৮ বা ১৯ জুনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এক্ষেত্রে ২৫ বা ২৬ জুলাই ভোট করতে হলে ৩৮ দিন সময় পাবে কমিশন। আর যদি ৩০ জুলাই ভোট হয়, তবে ৪২ দিন সময় থাকবে কমিশনের। এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের আগে চলতি বছর জুলাইয়ের মধ্যে সব সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করা হবে।

ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, আমরা ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কমিশন দ্রুত বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।  মূলত ভোট গ্রহণ পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। তবে ৩৮ দিন হাতে রেখেও ভোট করার ইতিহাস রয়েছে। তারা বলেন, তিন সিটির ভোটার তালিকা ও ভোট কেন্দ্রের প্রাথমিক তালিকা করার নির্দেশনা  দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটিতে ভোট। আর বাগেরহাট-৩ আসনের উপনির্বাচনও ওই দিন। ১৮ জুন থেকে গাজীপুরের ভোটের প্রচারণা করতে পারবেন প্রার্থীরা। এই দুই ভোটের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন জুলাইয়ে তিন সিটিতে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, আগস্ট থেকে জাতীয় নির্বাচনের অগ্রাধিকারমূলক কাজের চাপ থাকবে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে তফসিলের আয়োজন চলবে। তাই জুলাইয়ের মধ্যে সব সিটি নির্বাচনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, সব সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ৮৫২ রিম গোলাপি মুদ্রণ কাগজের প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৩৩৩ রিম কাগজ মজুদ ছিল। আর বাকি ৫১৯ রিম পরে সংগ্রহ করে কমিশন। নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা। তিন সিটিতে দলীয় কর্মকাণ্ডের বাইরেও তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন। বিশেষ করে রমজানকে সামনে রেখে তিন সিটির প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা নিয়ে বেশ ব্যস্ত রয়েছেন। ইফতার পার্টিসহ ঘরোয়া বৈঠক করছেন তারা। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দুই দলের লড়াই হবে সিটির ভোটের মাঠে। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় সবার নজর থাকছে সিটি ভোটের দিকে। সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচনকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক দলগুলো। নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে জনগণের কাছে কোন প্রতীকের কেমন কদর তার প্রমাণ হবে এ নির্বাচনে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের আগে সব সিটি নির্বাচন করে রাজনৈতিক দল ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে চায়। তারাও সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও খুলনার ভোটের অনিয়ম নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে কমিশন। সিলেট সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৮ অক্টোবর। গত ১১ এপ্রিল এই সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। রাজশাহী সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৫ অক্টোবর। গত ৯ এপ্রিল এই সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। বরিশাল সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৩ অক্টোবর। গত ২৭ এপ্রিল এই সিটির নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আর সংসদ নির্বাচনের কাজে পার্থক্য থাকলেও সব কাজ একই সঙ্গে করতে হচ্ছে। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনকে চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে সংসদ নির্বাচন। ডিসেম্বরের শেষ দিকে বা জানুয়ারির শুরুতে সংসদ নির্বাচন করার জন্য অক্টোবরে চূড়ান্ত করা হবে ভোটের দিনক্ষণ। নভেম্বরের মাঝামাঝিতে হতে পারে তফসিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর