প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানে সরকারের সব পদক্ষেপের প্রতি স্থানীয় জনগণ সর্বাত্মক সমর্থন দিচ্ছে। শিগগিরই প্রায় এক লাখ শরণার্থীকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হবে। সেখানে তারা বসবাসের জন্য আরেকটু ভালো পরিবেশ পাবেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ইউএনএফপিএ’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নাতালিয়া ক্যানেম গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএনএফপিএ কর্মকর্তাকে জানান, তার সরকার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় প্রদান করেছে। কারণ, বাংলাদেশের জনগণেরও এ ধরনের শরণার্থী হওয়ার মতো অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে তারা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষ করে নারী উন্নয়ন এবং মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আলোচনা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার যদিও তাদের অবস্থানকে স্বস্তিদায়ক করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, তবুও রোহিঙ্গারা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খুবই অমানবিকভাবে অবস্থান করছে। তিনি বলেন, সেখানে প্রতিদিন অন্তত ৬০টি শিশুর জন্ম হচ্ছে এবং বর্ষার কারণে তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ইউএনএফপিএর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নাতালিয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান করায় এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অসামান্য সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি এ সময় বাংলাদেশকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই পথ চলছে। জাতির পিতাই স্বাধীনতার পরে নারীদের জাতীয় উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষা সহায়তার সুবিধা অন লাইনে পায় সেজন্য ই-স্টাইপেন্ড ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দেন। বৈঠকে ট্রাস্টের কর্মকাণ্ড ও বর্তমান অবস্থা এবং ২০১৮ সালের বৃত্তি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।

ট্রাস্টের সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ট্রাস্টের সদস্যবর্গ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সফল উেক্ষপণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অভিনন্দন জানান।