শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়ার জামিন আদেশের দিন নিয়ে ভিন্নমত

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লায় হত্যা ও নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। গতকাল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ মামলায় তৃতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আগামী রবিবার এই মামলাটির সঙ্গে নড়াইলের মানহানির মামলা ও কুমিল্লায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জামিন আবেদন দুটি ওইদিন কার্যতালিকায় থাকবে বলে জানা গেছে। তবে আদেশের দিন নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও খালেদার আইনজীবীরা ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুনানি শেষ হওয়া আবেদনটিসহ বাকি দুটি আবেদনেও রবিবার আদালত আদেশ দেবে।’ অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন, একই সঙ্গে করা তিনটি জামিন আবেদনের একটিতে শুনানি শেষ হয়েছে। বাকি দুটি আবেদনের শুনানি নিয়ে তবেই আদালত আদেশ দেবে। গতকাল কুমিল্লার নাশকতা ও হত্যা মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের শুনানি শেষ হলে তার জবাব দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। এ সময় খালেদা জিয়ার অন্য আইনজীবীদের মধ্যে এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, মাহবুবউদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, এহসানুর রহমান, মো. মাসুদ রানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ, এ কে এম দাউদুর রহমান মিনা ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান রানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল জামিন আবেদনের শুনানিতে অহেতুক সময় ক্ষেপণ করেছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য কার্যতালিকার ৫ ও ৬ নম্বরে ছিল। সেই অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মামলাটি শুনানির জন্য এলেও শুনানি শুরু করতে পারিনি। আমাদের দুর্ভাগ্য খালেদা জিয়ার কারাবরণকে দীর্ঘায়িত করার জন্য অযথা সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছিলেন, সেই কারণেই কর্মীরা বাসে হামলা করেছে, সেখানে পেট্রলবোমা মারা হয়েছে। লোক মারা হয়েছে। এজাহারে শুধু এটুকুই বলা হয়েছে খালেদা জিয়া সম্পর্কে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানে মামলার জামিনের আবেদন জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন। সেই মামলাটি সেখানে বিচারাধীন রেখে হাই কোর্ট বিভাগ থেকে আদেশ দেওয়া সঠিক হবে না। এ মামলার আজকের শুনানি শেষ, আরও যে দুটি মামলা আছে তার মধ্যে একটি গাড়ি পোড়ানো মামলা ও অন্যটি মানহানির মামলা অর্থাৎ তিনটি মামলাই আগামী রবিবার তালিকায় থাকবে। আমি যতটুকু জেনেছি এগুলো শুনানির জন্য থাকবে, অন্যান্য মামলা শুনানি শেষে আদেশ দেবে আদালত।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘নিম্ন আদালতে একটি জামিনের আবেদন পেন্ডিং থাকা অবস্থায় হাই কোর্টে মুভ করা যাবে কিনা এটা একটা আইনগত প্রশ্ন। আইনগত প্রশ্নে আমি যদি আদালতকে সঠিকভাবে সহযোগিতা না করি তাহলে এর পরে সবাই হাই কোর্টে চলে আসবে। আইনের দৃষ্টিতে গরিব-ধনী সবাই সমান। আগামীকাল যদি একজন ফাঁসির আসামি, হত্যা মামলার আসামি বা একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী হাই কোর্টে চলে আসেন নিম্ন আদালতে জামিন না চেয়ে, কীভাবে ঠেকাবেন? তিনি বলেন, নিম্ন আদালতে একটি মামলা পেন্ডিং থাকা অবস্থায় হাই কোর্টে একই বিষয়ে আদেশ দেওয়া ঠিক হবে কিনা এটাই হলো বিবেচ্য বিষয়। তারা (খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা) এটা বুঝতে সমর্থ হচ্ছেন না বোধহয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আপিল বিভাগ থেকে খালেদা জিয়া চার মাসের জামিন পাওয়ার পর অন্যান্য মামলায় গ্রেফতার থাকায় তার মুক্তি আটকে যায়। পরে ২০ মে হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। এর মধ্যে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি মামলা বিশেষ আইনে হওয়ায় ওই মামলায় ফৌজদারি আপিল করা হয়। একই সঙ্গে খালেদার জামিন চাওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর