বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

তিস্তা নিয়ে বৈঠক করলেন মোদি

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিস্তা নদীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অন্যান্য নদ-নদীর সংযোগ নিয়ে গতকাল মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা তিস্তার সঙ্গে গঙ্গামানস (আসাম), সংকোষ (ভুটান) সংযোগ বিষয়ে রিপোর্ট দেন। ভারত সরকার জানায়, এই সম্ভাব্য সংযোগের বাস্তবায়ন রিপোর্ট নিয়ে বৈঠক হয়। এতে তিস্তা নদীসহ গঙ্গায় পানিপ্রবাহ বাড়ানো সম্ভব বলে সিদ্ধান্ত হয়।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই সংযোগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট পাওয়ার পর ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সরকারি সূত্র আশা করছেন, এখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সম্মতি দিলেই তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিতে পারেন। তবে এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয় বলে সূত্র জানিয়েছে। এই নদীসংযোগ স্থাপিত হলে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার ও ভুটানের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এর আগে ভুটান সরকার পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার কারণ দেখিয়ে সংকোষ নদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নদ-নদীগুলোর সংযোগে আপত্তি জানিয়েছিল। ভারত সরকার মনে করে, এই নদীসংযোগ স্থাপন করা গেলে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও বিহার রাজ্য উপকৃত হবে। এতে নদ-নদীগুলোয় পানিপ্রবাহ যথেষ্ট বেড়ে যাবে। এতে তিন রাজ্যে অতিরিক্ত ৬ লাখের বেশি কৃষিজমিতে সেচ দেওয়া যাবে। এমনকি প্রায় ৬ হাজার কিলোওয়াট অতিরিক্ত জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। গতকালের বৈঠকে প্রিফিজিবিলিটি রিপোর্ট দেওয়া হয়। এরপর প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আন্তনদী সংযোগের ওপর এক বিশেষ কমিটি তৈরি করা হয়। তারা ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট দেন। সুপ্রিম কোর্টে এক মামলার ভিত্তিতে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশ ও ভারতের দাক্ষিণাত্যের নদ-নদীগুলোর সংযোগ নিয়ে যতটা অগ্রগতি হয়েছে, ততটা হিমালয়ের নদ-নদীগুলো নিয়ে হয়নি। ভারত সরকার সরকারিভাবে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছিল বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে ভারত সরকার হিমালয়ের নদ-নদীগুলোর সংযোগ স্থাপন করবে না। এখন তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য ভারত সরকার এ উদ্যোগ নিতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর