মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুদক দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। সরকারের এ সংস্থাটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। কোনো অপরাধীকে রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা ব্যক্তি পরিচয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আমাদের কাছে অপরাধী অপরাধীই, এটাই মুখ্য বিষয়। তিনি গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইউসু ইউজমুর নেতৃত্বে তিন সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাতে এলে এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জাপানের তিন সদস্যকে স্বাগত জানিয়ে আরও বলেন, জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান এককভাবে সর্বোচ্চ উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র। তিনি বলেন, দুদকের কাছে অভিযোগের বস্তুনিষ্ঠতাই একমাত্র বিবেচ্য বিষয়। বিগত দুই বছরে ছয় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার, প্রতিনিয়তই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং মামলা পরিচালনার বিষয় উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কমিশন ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি অবলম্বন করেছে। এ সময় তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রম রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করে বলেন, কমিশনের সকল প্রকার প্রতিকারমূলক কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করা হয়। এ সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত কমিশনের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের বিকাশমান অর্থনীতি এবং ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই জাপানের ব্যবসায়ীরা এ দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ হয়রানিমুক্ত থাকলে, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের সর্বোচ্চ ঢেউ আসবে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত এ ক্ষেত্রে দুদকের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন বিনিয়োগ তথা ব্যবসার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসে যদি কোনো জাপানি কোম্পানি ঘুষ বা দুর্নীতির শিকার হন বা হতে যাচ্ছেন এমন কোনো ঘটনা তাত্ক্ষণিকভাবে কমিশনকে জানালে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জাতীয় অভিযোগ জানানোর জন্য কমিশনের দ্বার উন্মুক্ত জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন-১০৬ এ যে কোনো অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। তিনি রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রয়োজন হলে আমার নিজের ফোনেও আপনি অভিযোগ জানাতে পারেন। দুদক চেয়ারম্যান দুদকের বিভিন্ন কার্যক্রমে জাইকার অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, কমিশনের কর্মকর্তাদের তদন্তের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদানে জাপানের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সময় রাষ্ট্রদূত দুদক চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দুদকের সকল কার্যক্রম বাংলাদেশের উন্নত ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রশিক্ষণসহ দুদকের সার্বিক কার্যক্রমে জাপানের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন রাষ্ট্রদূত। জাইকার সহযোগিতায় পরিচালিত গণশুনানিসহ বিভিন্ন দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম অবহিত করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ প্রোথিত করার জন্য দেশের প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘সততা সংঘ’, আট শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘সততা স্টোর’ স্থাপন, এ ছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিভিন্ন সুবচন সংবলিত শিক্ষা উপকরণ যেমন— খাতা, কলম, জ্যামিতি বক্স, স্কেল, ছাতা ইত্যাদি বিতরণ করছে। তিনি বলেন, নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিনির্মাণের উদ্দেশ্যেই কমিশন এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সর্বশেষ খবর