মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফের পাহাড়ি সংগঠনের সংঘর্ষ গুলিতে নিহত তিনজন

প্রতিদিন ডেস্ক

রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে জঙ্গলী চাকমা নামের একজন নিহত হয়েছেন। এদিকে বাঘাইছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে সুরেশ বিকাশ চাকমা নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার মরাটিলা দুর্গম পাইয়ংপাড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) গ্রুপের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

রাঙামাটি : রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে জঙ্গলী চাকমা (৩২) নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন সুমতী চাকমা (৩০) নামের আরও একজন। শুক্রবার সকালে উপজেলার দোসরপাড়া স্টিল ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জঙ্গলী চাকমা গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সক্রিয় সদস্য বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। এদিকে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সুরেশ বিকাশ চাকমা (৫৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের দোখাইয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লংগদুর দোসরপাড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপ ও বর্মা গ্রুপের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয়পক্ষে ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধ চলে। এতে গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সদস্য জঙ্গলী চাকমা ও সুমতী চাকমা গুলিবিদ্ধ হলে প্রতিপক্ষ প্রসীত গ্রুপ পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় জঙ্গলীর। পরে আহত সুমতী চাকমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যৌথ বাহিনীর টহল জোরদার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রঞ্জন কুমার সামন্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যৌথ বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি। এদিকে বাঘাইছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে সুরেশ বিকাশ চাকমা নামে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের দোখাইয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা বাএ্যা চাকমার ছেলে। এ ছাড়া তিনি বাঘাইছড়ি উপজেলা এমএন লারমা গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এ হত্যার ঘটনার জন্য প্রতিপক্ষ গ্রুপ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছে সংগঠনটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের দোখাইয়া গ্রামে ইউপিডিএফের সশস্ত্র গ্রুপের সদস্যরা হানা দেয়। এ সময় সুরেশ নিজ ঘরে অবস্থান করছিলেন। দুর্বৃত্তরা তার বাড়িতে হানা দিয়ে সুরেশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তিনি ঘটনাস্থলে নিহত হলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় যৌথ বাহিনীর একটি দল। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার মরাটিলা দুর্গম পাইয়ংপাড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) গ্রুপের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। জনসংহতি সমিতির এই সদস্যের নাম বিজয় ত্রিপুরা (৩২)। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। একদল অস্ত্রধারী তাকে ঘরে ঢুকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এদিকে, পানছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলের দিকে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) গ্রুপের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ কে দায়ী করেছেন। অবশ্য ইউপিডিএফ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সর্বশেষ খবর