কার্লোস আলবার্তো পেরেরা ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে যখন ১৬ বছর বয়সী রোনাল্ডোকে দিলেন, তখন বিস্ময়ের ঢেউ উঠেছিল গোটা ব্রাজিলে।
রোমারিও, বেবেটো, মুলারদের সঙ্গে তরুণ রোনাল্ডোকে সুযোগ দেওয়াটা যে সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফসল ছিল, ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ সালের বিশ্বকাপই প্রমাণ। রোনাল্ডো এরপর তিনবার বিশ্বকাপ খেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন ২০০২ সালে। ১৯৯৮ সালে ফাইনাল খেললেও রানার্স আপ হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনালের বেড়া টপকাতে পারেননি। তিন আসরে ২১ ম্যাচে অংশ নিয়ে গোল করেছেন ১৬টি। ২০১৪ সালে মিরোশ্লাভ ক্লোসা সব মিলিয়ে ১৭ গোল করে ভেঙেছেন রোনাল্ডোর রেকর্ড। এবার তিনি ফিফা ও রাশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফুটবল মহাযজ্ঞে। প্রিয় ব্রাজিলের খেলা উপভোগ করছেন। আজ সেন্ট পিটার্সবার্গে কোস্টারিকার বিপক্ষে জীবনবাজির ম্যাচ খেলতে নামছে সেলেকাওরা। হেক্সা মিশনে আসা দলটিকে সাফল্য পেতে অলআউট ফুটবল খেলার পরামর্শ দিয়েছেন রোনাল্ডো, ‘দ্য ফেনোমেনন’। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাননি। কিন্তু বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের সঙ্গে সাজঘরে থেকে নিজেকে পরিণত করে নিয়েছিলেন রোনাল্ডো। চার বছর পর রোনালদিনহোকে নিয়ে ব্রাজিল দলকে একাই টেনে নিয়ে যান বিশ্বকাপের ফাইনালে। যদিও রহস্যময় ইনজুরির (!) জন্য ফাইনালে নিজের মান ধরে খেলতে পারেননি। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেন ২০০২ সালে জার্মানির বিপক্ষে। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে ৪ গোল করেছিলেন রোনাল্ডো। চার বছর পর ২০০২ সালে ব্রাজিলকে পঞ্চম বিশ্বকাপ জেতাতে ৭ ম্যাচে গোল করেন ৮টি। ২০০৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নেওয়ার আগে ৭ ম্যাচে গোল করেন ৪টি। বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার রোনাল্ডো এখনো তারকা খ্যাতিতে উজ্জ্বল। খেলার সঙ্গে না থাকলেও খোঁজখবর রাখেন নিয়মিত। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন। ৪১ বছর বয়স্ক রোনাল্ডো চাইছেন তার দল ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জিতুক, ‘ব্রাজিলিয়ানরা চ্যাম্পিয়ন ছাড়া অন্য কোনো কিছুকে সাফল্য বলে মেনে নেয় না। বর্তমান ব্রাজিল দলটির সুযোগ রয়েছে শিরোপা জেতার। এ জন্য স্ট্রাইকারদের গোল করতে হবে।’ সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে স্ট্রাইকারদের মিসের জন্য জেতা সম্ভব হয়নি। আজ কোস্টারিকার বিপক্ষে স্ট্রাইকারদের গোল করতে বললেন ফেনোমেনন, ‘জিততে হলে গোল মিস করা যাবে না।’ সেন্ট পিটার্সবার্গে কোস্টারিকার বিপক্ষে জিতলে গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া অনেকটা সহজ হয়ে পড়বে সেলেকাওদের। ২৭ জুন তিতের দলের পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ সার্বিয়া।