শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিলেট সিটি

রহস্যময় অবস্থানে জোটের শরীকরা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে জোটের শরিক দল নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে দুই শীর্ষ দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই জোটের এই দুই প্রধান দল থেকে মেয়র পদে প্রার্থী দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক জামায়াত ও খেলাফত মজলিসও মেয়র পদে প্রার্থী দিতে চায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিও আছে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌড়ে। উভয় জোটের এই শরিক দলগুলো বেশ কিছুদিন ধরে মাঠে তৎপর রয়েছে। শরিক দলগুলোর এই তৎপরতায় ভোটের লড়াইয়ে নিজেদের প্রার্থীদের জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি। আগামী ৩০ জুলাই সিলেট সিটি (সিসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২৮ জুন শেষ হচ্ছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়। আওয়ামী লীগ থেকে এবার সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং বিএনপি থেকে বর্তমান সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মনোনয়ন পাচ্ছেন, এটা প্রায় নিশ্চিত বলে দল দুটির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে। এ রকম অবস্থায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই চাইছে, তাদের নিজ নিজ জোটের শরিক দলগুলো নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবে জাতীয় পার্টি, জামায়াত ও খেলাফত মজলিস মাঠ ছাড়তে নারাজ। দুই জোটের এই শরিক দলগুলো জোরেশোরেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস দিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এ দলগুলোর কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তা শঙ্কার কারণ হতে পারে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের উদ্যোগে শরিক দলগুলো নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশাও করছে ওই বড় দল দুটি। এ বিষয়ে সিলেট মহানগর খেলাফত মজলিসের সেক্রেটারি ও মেয়র প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এখনো পর্যন্ত বড় দল হিসেবে বিএনপি থেকে জোটবদ্ধ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা প্রার্থিতা ঘোষণা করেছি। মহানগর জামায়াতের আমির ও মেয়র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে যে কোনো দল প্রার্থী দিতে পারে। তবে জোটবদ্ধ দলগুলো চাইলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রার্থী দিতে পারে। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আলোচনায় আছে। তবে জামায়াত থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জোটের দলগুলোও যাতে আমাকে সমর্থন দেয়, সে চেষ্টা চালাচ্ছি।’

মহানগর জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মেয়র প্রার্থী আবদুস সামাদ নজরুল বলেন, দলের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে এক বছর ধরে আমি মাঠে আছি। এতদিন ধরে জোটগতভাবে প্রার্থী দেওয়া হবে এ ধরনের আভাস পাওয়া যায়নি। এখন বিষয়টি কেন্দ্রই সিদ্ধান্ত নেবে। শরিক দলগুলো মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইলেও জোটের স্বার্থেই তারা মাঠ থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে মনে করছে বিএনপি। সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের পক্ষ ও বিপক্ষের লড়াই। গণতন্ত্রের পক্ষের সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে। যিনি সবচেয়ে যোগ্য, তার পক্ষেই সবাই কাজ করবেন।’ এদিকে, মহাজোটের সব শরির দলই শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবেন বলে মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি মহাজোটের কেউ যদি প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা রাখেন, তবে তিনিও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবেন।

সর্বশেষ খবর