শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ব্রাজিল তারকাদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক, সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে

ম্যাচ শেষ হয়েছে প্রায় আড়াই ঘণ্টা হলো। মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে থেকে প্রায় সবারই পা ব্যথা হয়ে গেল। কিন্তু কষ্ট করলেই তো মিষ্টি মিলে। সত্যিই মিলল। কোস্টারিকার অধিনায়ক ব্রায়ান রুইজের সঙ্গে কথা হলো কিছুক্ষণ আগে। তিনি বলে গেলেন, নেইমার দারুণ খেলেছে। তবে এই ব্রাজিল দলটা কেবল নেইমারসর্বস্ব নয়। এখানে কটিনহো, জেসুস আর উইলিয়ানের মতো ফুটবলার আছে। রুইজ ইংলিশ জানেন না। তিনি স্প্যানিশ ভাষায় বলেছেন। পাশে দাঁড়ানো ব্রাজিলীয় সাংবাদিক অগাস্তু অনুবাদ করে দিলেন রুইজের কথাগুলো। কিছুক্ষণ পরই রুইজের হেঁটে যাওয়া পথ দিয়ে মিক্সড জোনে এলেন ব্রাজিলের তারকারা।

সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। কিন্তু মিক্সড জোনে মনে হলো বাংলাদেশের গ্রীষ্মের গরম। না হলে শরীর ওরকম ঘামছে কেন! তাপমাত্রা বেড়ে গেল কেন কপালের! নেইমার আসবেন বলে কী! আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর নেইমার এলেন। ফিফা কর্তাদের তত্পরতা বেড়ে গেল। একটা সেলফি নিতে গিয়ে ধমক খেতে হলো। কিন্তু নেইমারের সঙ্গে যে কথা বলা চাই। তা আর হলো না। তিনি দুই হাত সামনে দিয়ে ‘নো, নো’ বলতে বলতে চলে গেলেন। মোটেও থামলেন না। তবে নেইমার চলে গেলেও অন্যরা থামলেন। দীর্ঘ সময় কথা বললেন মিডিয়ার সঙ্গে। সবার প্রশ্নের উত্তর দিলেন ধীরেসুস্থে। ব্রাজিলের ফুটবলাররা বেশিরভাগই ইংরেজি জানে না। নেইমার জানতেন কিছু কিছু। তিনি কথা না বলেই চলে গেলেন। ব্রাজিলের সাংবাদিক বন্ধু জানালেন— কটিনহো, উইলিয়ান, পলিনহো, কাসেমিরো, ফগনার আর গ্যাব্রিয়েল জেসুস ইংরেজিটা জানেন মোটামুটি। ওদের পাওয়া গেল হাতের নাগালে। ল্যাটিন অঞ্চলের সাংবাদিকদের ভিড় ঠেলে অবশ্য সামনে যাওয়াটাই মুশকিল। তারপরও কটিনহো আর কাসেমিরোকে পাওয়া গেল কাছাকাছি। তারা জানালেন, বিশ্বকাপটা এবার জিততেই ব্রাজিল খেলছে। কিন্তু কোস্টারিকার বিপক্ষে কি খুব কঠিন করে জিতলেন না ম্যাচটা! কটিনহোর মুখে এবার বিস্তীর্ণ হাসি ফুটল। ‘কে বলল ভাই!’ প্রতিবেদকের মুখের দিকে তাকিয়ে কটিনহো বললেন, ‘জয়ের পর আর কিছু ভাবতে চাই না। এবার পরের ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে আছি। তবে আপনি ঠিকই বলেছেন, ম্যাচটা কঠিন ছিল। অবশ্য শেষ পর্যন্তও আমরা বিশ্বাস হারাইনি। জয়টা কিন্তু ঠিকই পেয়েছি।’ কটিনহোর বক্তব্যটাই মেনে নিলেন কাসেমিরো।

ব্রাজিল তারকাদের সঙ্গে কিছুক্ষণের আলাপনে দারুণ একটা বিষয় আবিষ্কার করা গেল। তারা মোটেও অহঙ্কারী নয়। একেবারেই সাদাসিধে। চলনে-বলনে কোনো গর্ব নেই। গৌরব আছে। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে জড়িয়ে বিশ্বকাপ খেলছেন, এই গৌরব প্রতিটি ব্রাজিলীয় ফুটবলারেরই আছে। ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন স্প্যানিশ ভাষায় কী বললেন বোঝা গেল না। গতকালের ম্যাচের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাও দীর্ঘ সময় ধরে স্প্যানিশে অনেক কিছু বললেন। তাদের বক্তব্য বোঝার চেয়েও বড় বিষয় ছিল, ব্রাজিল তারকাদের সান্নিধ্য উপভোগ করা। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার মাত্র দুই হাত দূর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। নেইমারকে ডাকতে ডাকতে পেছন পেছন ছুটে যাওয়া। এ যে সত্যিই এক অদ্ভূত শিহরণ জাগানো অনুভূতির জন্ম দেয়!

সর্বশেষ খবর