রবিবার, ২৪ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

স্বপ্ন ছিল বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়ার

—সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বপ্ন ছিল বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়ার

ব্যক্তি ইতিহাসকে বদলাতে পারে। সমষ্টিগত ব্যক্তি সমাজ, সংস্কৃতিকে বদলে দিতে পারে। মুক্তির অর্জন হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানার বদলে সামাজিক মালিকানায় রূপান্তর করতে হবে। পৃথিবীকে বোঝা এবং বদলানোর চেষ্টাই ছিল আমার স্বপ্ন ও দায়িত্ব। নিজের ৮২তম জন্মদিন উপলক্ষে বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোরে ২২ জুন প্রচারিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে কথাগুলো বললেন বিশিষ্ট লেখক, প্রাবন্ধিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তার জন্ম ২৩ জুন। ‘গাছপাথর’ নামে তার লেখা ‘সময় বহিয়া যায়’ শীর্ষক কলাম আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তরুণসমাজে। ১০০-এর বেশি প্রকাশিত বই এবং অসংখ্য অসংকলিত প্রবন্ধ, রচনা, বক্তৃতা, কলাম, সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে এই জনবুদ্ধিজীবীর। উন্নয়নের কার্যকারিতা প্রসঙ্গে ড. চৌধুরী বলেন, উন্নয়নকে সর্বত্রগামী এবং বৈষম্যহীন হতে হবে। উন্নয়ন হবে নদীর মতো, প্রবহমান। তা সবাইকে স্পর্শ করবে, উর্বর করবে, উজ্জীবিত করবে, সবার কাছে পৌঁছাবে। কিন্তু আমাদের দেশে উন্নয়ন হচ্ছে পাহাড়ের মতো। তা ওপরেই থাকে, সবার কাছে পৌঁছায় না। বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাদের দৌরাত্ম্যে মানুষ হতাশ হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ বেকারত্ব। দিনের পর দিন কর্মহীন মানুষগুলো এর বিপক্ষে দাঁড়াতে চায়। যখন পারে না তখন মাদকে আসক্ত হয়, জঙ্গি হয়, আত্মহত্যা করে। পুঁজিবাদ সমাজে যে সংকট সৃষ্টি করে এখানে সেটাই হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা থেকে যদি জঙ্গি তৈরি হয় তাহলে দেখতে হবে কারা এগুলো তৈরি করছে। কেন করছে? তার মানে তারা চাইছে গরিবরা গরিবই থাকুক এবং তাদের সেবা করুক। তিনি আরও বলেন, সব জায়গায় পুঁজিবাদ ঢুকে পড়েছে। সাধারণ মানুষ মুক্তি চেয়েছিল। পুঁজিবাদ বিচ্ছিন্নতা এবং বৈষম্য জন্ম দেবেই। এখানেও তাই হয়েছে। তিন ধারার শিক্ষা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার বদলে পৃথক করছে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীর সঙ্গে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীর পরিচয় কীভাবে হবে। তারা তো কেউ একে অন্যকে বুঝবেই না। এই গণতান্ত্রিক সমাজকে রক্ষা করা ছিল রাষ্ট্রের দায়িত্ব। স্বপ্ন ছিল সমষ্টিগত উন্নয়ন কিন্তু আজকে মানুষ ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এই বাংলাদেশ চাইনি।

সর্বশেষ খবর