সোমবার, ২৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

দণ্ডিত মামলায় খালেদার আপিল শুনানির দিন নির্ধারণ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল চেয়ে করা আপিল শুনানির দিন ঠিক করার বিষয়ে আজ সোমবার আদেশ দেবে হাই কোর্ট। গতকাল দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।

আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন। অন্যদিকে, কুমিল্লায় পেট্রলবোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলায় খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকবে কি-না এ বিষয়ে আগামী ২ জুলাই আদেশ দেবে আপিল বিভাগ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিষয়ে খুরশীদ আলম খান বলেন, অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়ার আপিলসহ পৃথক তিন আসামির তিনটি আপিল শুনানির দিন ধার্য করার জন্য আবেদন করছি। তিনি বলেন, আপিল বিভাগের নির্দেশনা আছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করার। তখন আদালত বলেন, আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী শুধু খালেদা জিয়ার আপিলটি শুনতে পারব। কিন্তু দুদকের মামলার শুনানির এখতিয়ার না থাকায় বাকি আসামিদের আপিল শুনতে পারব না। আদালত বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির দিন ধার্যের জন্য আগামীকাল আদেশের জন্য থাকবে।’

এর আগে গত ১৬ মে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে খালেদা জিয়া তার সাজার বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যে আপিল করেছিলেন তা ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। ওই দিন থেকেই তিনি পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। এই মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় কারামুক্তি পাননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

কুমিল্লার এক মামলায় জামিন প্রশ্নে আদেশ ২ জুলাই : কুমিল্লায় পেট্রলবোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলায় খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। পরে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২ জুলাই দিন ঠিক করেছে আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আর কুমিল্লায় কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালেদার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যে লিভ টু আপিল করেছে তা আজ সোমবার শুনবে সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল কুমিল্লার হত্যা মামলায় লিভ টু আপিলের ওপর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন। গত ২৮ মে হাই কোর্ট কুমিল্লার মামলা দুটিতে জামিন মঞ্জুর করলে ঈদের আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠেন দলটির নেতারা। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার আদালত ওই জামিন স্থগিত করে দেয়। পরে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ ওই স্থগিতাদেশ বহাল রেখে ২৪ জুন লিভ টু আপিল শুনানির তারিখ দিলে ঈদের আগে খালেদার মুক্তি আটকে যায়। এর ধারাবাহিকতায় অবকাশ ও ঈদের ছুটি শেষে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট খোলার পর সকাল পৌনে ১০টার দিকে সর্বোচ্চ আদালতে লিভ টু আপিলের শুনানি শুরু হয়।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে ২০-দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া পেট্রলবোমায় আইকন পরিবহনের একটি বাসের কয়েকজন যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। আহত হন আরও ২০ জন। এ ঘটনায় মামলাটি করা হয়।

গ্যাটকো মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে আগামী ২৬ জুলাই দিন ধার্য করেছে আদালত। পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন।

গতকাল মামলাটি অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতে হাজিরা দেন। মামলায় দুই আসামি তানভীর আহমেদ ও গালিব হোসেনের পক্ষে হাই কোর্টে স্থগিতাদেশ থাকায় অভিযোগ শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। এই মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে আছেন। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ১৩ মে তৎকালীন জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র জমা দেন।

সর্বশেষ খবর